নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দেশের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু হবে আগামী ৯ নভেম্বর। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মূল্যায়ন। সম্প্রতি মূল্যায়নের সময়সূচি সংযুক্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এর আগে ৫ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মূল্যায়ন হবে বলে অধিদপ্তর থেকে জানানো হলেও পরবর্তীতে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার মূল্যায়নের অ্যাপ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে মাউশি।
জানা গেছে, অ্যাপসের মাধ্যমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে। এ জন্য ‘নৈপুণ্য’ নামে একটি অ্যাপ ব্যবহারের গাইডলাইন বৃহস্পতিবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।
মাউশির এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালুকৃত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়নের তথ্য সংরক্ষণ ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের সুবিধার্থে ‘এটুআই’ এর কারিগরি সহায়তায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক ‘নৈপুণ্য’ নামে একটি অ্যাপ উন্নয়ন করা হয়েছে। অ্যাপটি ৪ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে উন্মুক্ত করা হবে। অ্যাপটির ওয়েব ভার্সন ব্যবহার সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন বা নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বরের মধ্যে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ইআইআইএন নম্বর ধারী স্কুলের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের তার মোবাইল নম্বরে প্রাপ্ত ইউজার আইডি ও পিন ব্যবহার করে লগইন করবেন। এরপর অন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের সেখানে ইনপুট দিতে হবে। আর ইআইআইএনবিহীন স্কুলের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যথাযথ তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করা হলে তা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ইমেইলে পৌঁছে যাবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস তখন আবেদনটি অনুমোদন করবেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অনুমোদনের পর প্রতিষ্ঠান প্রধানের মোবাইলে একটি সিস্টেম জেনারেটেড নম্বর, একটি ইউজার আইডি ও পিন নম্বর যাবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান মোবাইল নম্বরে প্রাপ্ত সিস্টেম জেনারেটেড নম্বর, ইউজার আইডি ও পিন ব্যবহার করে লগইন করবেন এবং পরবর্তীতে শিক্ষকদের ইনপুট দেবেন।
অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে লগইন শেষে হোম পেজে বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট সাতটি ব্যবস্থাপনা দেখা যাবে। এই ব্যবস্থাপনাগুলো প্রতিষ্ঠান প্রধানের আইডি থেকে সম্পন্ন করতে হবে। এরপর প্রতিষ্ঠানের ব্রাঞ্চ, শিফট ব্যবস্থাপনা, ভার্সন ব্যবস্থাপনা, সেকশন তৈরি করতে হবে। তারপর প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত পিডিএস তালিকায় থাকা বা না থাকা শিক্ষকদের তথ্য যুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের তথ্য ও শিক্ষক নির্বাচন শেষে তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে গত জুনে অনুষ্ঠিত ষান্মাষিক মূল্যায়নের মতোই। ৯ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এই মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যে কাজই দেওয়া হোক, শিক্ষার্থীদের লিখে জমা দিতে হবে। কিছু তথ্য সার্চ করে আবার কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করে জমা দিতে হবে। এই কার্যক্রম স্কুলেই চলবে এবং কাজ শেষে মূল্যায়ন হবে।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের অ্যাপে যোগ করা হবে এবং তারা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন। এই তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকই কেবল ওই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন।
মন্তব্য করুন