

তৃতীয় দাম্পত্য সম্পর্ক ভাঙার ঘোষণা ঘিরে যখন নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে মীরা বাসুদেবন, ঠিক তখনই সামনে এলো তার এক চাঞ্চল্যকর স্মৃতিচারণ। মালয়ালামের বহুল প্রশংসিত চলচ্চিত্র ‘থানমাথরা’র শুটিংয়ের এক বিশেষ দৃশ্য নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। যেখানে স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করতে গিয়ে মোহনলালকে নগ্ন অবস্থায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়েছিল—আর সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতাই প্রথমবারের মতো প্রকাশ করলেন জনপ্রিয় এই দক্ষিণী অভিনেত্রী।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অমৃতা টিভির রেড কার্পেট চ্যাট শোয়ে মীরা বলেছিলেন, “আমি পরিচালককে একটা প্রশ্ন করেছিলাম—‘এই দৃশ্যটা কেন দরকার? এর উদ্দেশ্য কী?’ তিনি বলেছিলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
সিনেমার একেবারে শুরু থেকেই এই দুই চরিত্রকে খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অন্তরঙ্গ একটি পরিবারও বটে। স্বামী-স্ত্রী সবসময় খুব কাছাকাছি থাকে, খুব টাচি-ফিলি। আর এই দৃশ্যটিতে দেখা যায়, হঠাৎ মনোযোগ হারান তিনি। স্ত্রীকে ফেলে টিকটিকি খুঁজতে যান। এই ব্যাপারটি তাকে (স্ত্রীকে) ভেঙে দেয়। তখন সে বুঝতে পারে তার স্বামীর মাঝে কোনো একটা সমস্যা আছে।‘
তবে দৃশ্যটির শট দেওয়া মোহনলাল ও মীরার জন্য ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। মোহনলাল এ নিয়ে মীরার কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। তা জানিয়ে মীরা বলেন, ‘মোহনলাল স্যারের জন্য এটা আরো বেশি কঠিন ছিল। কারণ তাকে দৃশ্যটিতে সম্পূর্ণ নগ্ন হতে হয়েছিল। তার জন্য এটা বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। স্যারকে নিয়ে যেমন ভাবতে হয়েছিল, তেমনই নিজেকে নিয়েও ভাবতে হয়েছিল। তাছাড়া আমার সততা, আমার সম্মান নিয়ে ভাবতে হচ্ছিল। তিনি খুবই পেশাদার একজন মানুষ। শট নেওয়ার আগে মোহনলাল স্যার এসে আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, ‘আমি খুব দুঃখিত। আমি যদি কোনোভাবে আপনাকে লজ্জায় ফেলি, তার জন্য দুঃখিত।’
পরের ঘটনা বর্ণনা করে মীরা বলেন, ‘শুটিংয়ের আগে তিনি একটি পেটিকোট পরে ছিলেন এবং দৃশ্যের ঠিক আগ মুহূর্তে তা খুলে ফেলেন। আমি ব্লেসি স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম যেন, খুব ছোট একটা দল নিয়ে এই শুটটি করা হয়। তারাও সেই সম্মান করেছে। আমরা সবাই মিলে দৃশ্যটি খুব আন্তরিকতা আর সততা দিয়ে করেছি।’
ব্লেসি পরিচালিত ‘থানমাথরা’ চলচ্চিত্র মুক্তির পর ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। তাছাড়া একাধিক কেরালা স্টেট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডও জিতে নেয়, যার মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা পরিচালক। এই সিনেমার জন্য মোহনলাল পঞ্চমবারের মতো সেরা অভিনেতা বিভাগে রাজ্য পুরস্কারও অর্জন করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে তেলেগু ভাষার ‘গোলমাল’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন মীরা বাসুদেবন। একই বছর বলিউডে অভিষেক ঘটে তার। একই বছরে তামিল ভাষার ‘আন্নি সরনাদান্দেন’ সিনেমায় অভিনয় করেন মীরা। এ সিনেমার মাধ্যমে নজর কাড়েন এই অভিনেত্রী। কেবল তাই নয়, ‘তামিল নাড়ু স্টেট ফিল্ম স্পেশাল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন মীরা। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার গুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ওরুভান’, ‘একান্তম’, ‘কাক্কি’, ‘পাচমারাথানালিল’ প্রভৃতি।
মন্তব্য করুন