আফ্রিকার নেতারা ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফ্রিকা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও সবচেয়ে বেশি তার প্রভাব পড়ছে এ মহাদেশে। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত আফ্রিকান মিনিস্টেরিয়াল কনফারেন্স অন দ্য এনভায়রনমেন্টে নেতারা জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ও ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
কেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুসালিয়া মুদাভাদি বলেন, আমরা যখন পৃথিবীজুড়ে তাপমাত্রা বাড়তে দেখছি, তখন আফ্রিকা সেই পরিবর্তনের শিকার হলেও এই সংকট তৈরি করেনি। কিন্তু আমরা সেই ভার বহন করছি। তিনি আরও সতর্ক করেন, পরিবেশগত এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেরি করলে আফ্রিকার কৃষি, পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
জাতিসংঘের মরুকরণ প্রতিরোধ সংস্থার প্রধান ইব্রাহিম থিয়াও উল্লেখ করেন, গত ৭০ বছরে আফ্রিকার ৬০ শতাংশ চাষযোগ্য জমি হারিয়েছে, অথচ নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের মাত্রা খুবই কম। আফ্রিকার সম্পদ অন্য দেশ ব্যবহার করছে, কিন্তু আফ্রিকা ঠিকমতো আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে না।
কেনিয়ার পরিবেশমন্ত্রী ডেবোরাহ বারাসা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সত্য, যা স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশে একসঙ্গে সংকট সৃষ্টি করছে। আফ্রিকায় বন্যা, খরা, রোগ প্রাদুর্ভাব ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে সংঘর্ষ বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, তথ্য ও তহবিল ঘাটতি এবং দুর্বল আইন প্রয়োগ এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের পরিবেশ কমিশনার মোসেস ভিলাকাতি বলেন, এখন কথা বলার সময় শেষ, কাজের সময় এসেছে। আমরা একসঙ্গে একটি সবুজ ও টেকসই আফ্রিকার জন্য কাজ করব। আমাদের মেধা, সম্পদ ও অংশীদারিত্বে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে হবে।
আফ্রিকান নেতারা জোর দিয়ে বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ভার যার, তারাই এর সমাধান ও দায়ভার বহন করবে। আর আফ্রিকা আজও এই অবিচারের শিকার। তাই তারা দ্রুত ও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যাতে জলবায়ু সংকটের প্রভাব মোকাবিলা করে মহাদেশের মানুষের জীবন ও পরিবেশ রক্ষা করা যায়।
সূত্র : চায়না ডেইলি
মন্তব্য করুন