ভোলার লালমোহনে প্রবহমান খাল দখল করে পৌরসভার মালটিপারপাস মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে অল্প বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় আশপাশের এলাকা। জলাবদ্ধতায় নাকাল পৌর শহরের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, খালের প্রবাহ না থাকায় পানি নোংরা হয়ে একদিকে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, অন্যদিকে মশা-মাছির প্রজননক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, খালটি লালমোহন খাল থেকে বয়ে যাওয়া ২০-২৫ ফুট প্রশস্তের একটি সংযোগ খাল। যেটা লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ দিয়ে লালমোহন থানার মোড় পর্যন্ত এসে পূর্ব দিকের আরেকটি খালে গিয়ে মিশেছে। ভোলা জেলা পরিষদের আওতাধীন এ খালটিকে প্রথমে ৩-৪ ফুট প্রশস্ত ড্রেনে পরিণত করা হয়। পরে সেই ড্রেনের ওপর পৌর মাল্টিপারপাস মার্কেট নির্মাণ করে লালমোহন পৌরসভা।
জলাধার আইন ২০২০-এর ৫ ধারা অনুযায়ী, ‘প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা কিংবা হস্তান্তর বেআইনি। এ ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০ অনুযায়ীও এটা বেআইনি।
পৌর শহরের ব্যবসায়ী এমরান, মিজানসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, আগে এখানে খাল ছিল। সেটিকে সংকুচিত ড্রেন বানিয়েছে পৌরসভা। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দোকানঘরসহ বাসাবাড়িতেও পানি ওঠে। শুধু তাই নয়, শুকনো মৌসুমে জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। মশার উপদ্রব অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে অবিলম্বে খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাল দখল করে পৌর মালটিপারপাস মার্কেট নির্মাণ করলেও জেলা পরিষদের আপত্তির কারণে দোকান বরাদ্দ দিতে পারেননি তৎকালীন পৌর মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন। তবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মনজুর হোসেন ১৯ আগস্ট পৌর প্রশাসকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ৮ সেপ্টেম্বর মার্কেটের দোকান বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি পর বরাদ্দ সম্পন্ন করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও তৎকালীন পৌর প্রশাসক মো. মনজুর হোসেন বদলি হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে জেলা পরিষদের খালের ওপর মার্কেট নির্মাণে কোনো বাধা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে লালমোহন পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পরে জেলা পরিষদের সঙ্গে একটি অ্যাগ্রিমেন্ট (চুক্তি) হয়েছে। এরপরই তার মার্কেটের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি তদন্ত করে দেখব।
মন্তব্য করুন