পরিবেশ অধিদপ্তরের ঘুম ভাঙাতে আসলেও তারা দরজা বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
বুধবার (২৭ মার্চ) আগারগাও পরিবেশ অধিদপ্তরের সামনে ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ও জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের’ দাবিতে বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
এ সময় সংগঠন থেকে পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালুসহ ৯ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাপা নেতারা বলেন, বায়ু দূষণের কারণে আমরা দিন দিন অন্ধকার যুগে চলে যাচ্ছি। আমরা এমন একটা শহরে বসবাস করছি, যেখানে দিন দিন মানুষের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে। যেখানে পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, ঢাকা শহরের মানুষের বছরে গড় আয়ু আট বছর করে কমে যাচ্ছে।
তারা বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মানুষের জীবন মান উন্নয়নের জন্য, সেখানে আমরা বায়ুদূষণ ছাড় দেওয়ার জন্য মানুষের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদের মাথা নত হচ্ছে। দূষণকারীদের কারণে সরকারের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই বায়ুদূষণে জড়িতদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংগঠনটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, দেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে সৃষ্টি করায় সরকারকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু মনে রাখতে হবে আমরা সাথে সাথে বায়ুদূষণেরও মডেল সৃষ্টি করেছি। তাই আপনারা যার যার জায়গা থেকে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে সোচ্চান হোন।
সমাবেশে সংগঠনটির সভাপতি বায়ুদূষণ রোধে বাপা’র সুপারিশ ও দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১. নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ দ্রুত প্রণয়ন করতে হবে।
২. নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখতে হবে ও নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নিতে হবে।
৩. শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে দূষিত শহরগুলোতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়াতে হবে।
৫. ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৬. যেখানে-সেখানে বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।
৭. সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, ডেসাসহ অন্যান্য সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
৮. নগরের বিভিন্ন ব্যস্ততম স্থানে তাৎক্ষণিক বায়ুমাণ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকর করতে হবে।
এদিকে বাপা স্মারকলিপি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি অফিসে না থাকায় তার প্রতিনিধি স্মারকলিপি গ্রহণ করে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাপার সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, সহসভাপতি মহিদুল হক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জমান মজুমদার, হুমায়ন কবীর সুমন, হাসান ইউসুফ, মাহাবুব হোসেনসহ বিভিন্ন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন