চোখ আমাদের দেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গগুলোর একটি। সামান্য ধুলাবালি, ধোঁয়া বা পরিবেশ দূষণের প্রভাবেই চোখে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। আবার আধুনিক জীবনে দীর্ঘ সময় মোবাইল, কম্পিউটার কিংবা টেলিভিশনের স্ক্রিনে চোখ রেখে কাজ করার ফলে চোখের ওপর চাপ বেড়ে যায়। এর ফলে অনেকেই অনবরত চোখে চুলকানি অনুভব করেন।
অনেক সময় আমরা এটিকে সাধারণ বিষয় ভেবে অবহেলা করি এবং হাত দিয়ে চোখ ঘষতে থাকি। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, চোখে বারবার চুলকানি আসলে কোনো না কোনো শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। অ্যালার্জি থেকে শুরু করে চোখের শুষ্কতা, এমনকি জটিল চক্ষু রোগেরও লক্ষণ হতে পারে এটি। তাই চোখে নিয়মিত চুলকানি হলে বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়, বরং কারণ খুঁজে বের করে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
জেনে নিন কী কী কারণে বারবার চোখ চুলকায়
১. ইনফেকশন বা সংক্রমণ
চোখে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে কনজাংটিভাইটিস (চোখ উঠা) হতে পারে। এতে চোখ লাল হয়ে যায়, ফুলে ওঠে এবং চুলকায়। অনেক সময় পুঁজ বা পানি বের হয়।
২. চোখ শুকিয়ে যাওয়া বা ড্রাই আই সিনড্রোম
যাদের চোখে পর্যাপ্ত পানি বা টিয়ার ফ্লুইড তৈরি হয় না, তাদের চোখ শুকিয়ে যায়। এতে জ্বালা, অস্বস্তি এবং চুলকানি দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় এয়ারকন্ডিশন রুমে থাকা, বেশি সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা বা বয়সজনিত কারণে এই সমস্যা হতে পারে।
৩. অ্যালার্জি
চোখ চুলকানোর সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো চোখের অ্যালার্জি। ধুলাবালি, ফুলের পরাগরেণু, পশুর লোম, মাথার খুশকি বা ঘরের ধুলাবালিতে অনেকের চোখে অ্যালার্জি দেখা দেয়। এতে চোখ লাল হয়ে যায়, পানি পড়ে এবং প্রচণ্ড চুলকানি হয়। বিশেষ করে বসন্ত বা শীতকালে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
৪. দৃষ্টিশক্তির সমস্যা
বারবার চোখ চুলকানো বা ঘষা কখনো দৃষ্টিশক্তির সমস্যারও লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে কর্নিয়ার সমস্যায় চোখে অস্বস্তি বা ঝাপসা দেখার পাশাপাশি চুলকানি দেখা দিতে পারে।
কী করবেন?
১. ঘন ঘন চোখ চুলকালে বারবার হাত দিয়ে ঘষবেন না। এতে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
২. পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
৩. যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৪. প্রয়োজনে ডাক্তার অ্যালার্জির ওষুধ বা আইড্রপ দিতে পারেন।
শেষ কথা
চোখের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন থাকা খুব জরুরি। ঘন ঘন চুলকানি অবহেলা করলে ভবিষ্যতে দৃষ্টিশক্তি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই সমস্যা দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র : আমেরিকান একাডেমি অব অপথালমোলজি, ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউট অব ইউএসএ
মন্তব্য করুন