কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া কীসের ইঙ্গিত? যা বলছেন চিকিৎসক

ছবি : এআই দিয়ে তৈরি
ছবি : এআই দিয়ে তৈরি

হঠাৎ বুকের ভেতর হৃৎপিণ্ড যেন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত ধকধক করতে শুরু করল! মুহূর্তেই ঘাম, মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড় আর এক ধরনের ভয়াল আতঙ্কে ভরে উঠল মন— আমাদের চারপাশে অনেকেই এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, এটি কি শুধুই মানসিক চাপ বা প্যানিক অ্যাটাকের ফল, নাকি আসলে হৃৎপিণ্ডের কোনো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত— যেমন অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন। দুটির প্রাথমিক লক্ষণ অনেকটাই মিল থাকায় সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে যান। অথচ চিকিৎসা এবং সতর্কতার গুরুত্ব দুটো ক্ষেত্রে ভিন্ন। চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময় হালকাভাবে না নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আসল কারণ বের করা অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসকের ব্যাখ্যা

ভারতের মণিপাল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ও কনসালট্যান্ট ডা. কেশব আর বলেন, প্যানিক অ্যাটাক ও অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন উভয়ের ক্ষেত্রেই দ্রুত হৃদস্পন্দন, মাথা ঘোরা ও ভয়ের অনুভূতি থাকতে পারে। তবে পার্থক্য হলো, অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন হৃৎপিণ্ডের অস্বাভাবিক ছন্দ, যা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। আর প্যানিক অ্যাটাক মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়া।

অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন

এটি হলো হৃৎপিণ্ডের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেতের কারণে হৃৎস্পন্দনের অনিয়ম ও দ্রুততা। সাধারণত বয়স্ক মানুষ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা স্ট্রোকের ইতিহাস রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বেশি দেখা যায়।

প্রাথমিক লক্ষণ

১. দ্রুত বা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন

২. মাথা ঘোরা, বমিভাব

৩. ক্লান্তি

৪. শ্বাসকষ্ট

যে কারণে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন

অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন উপেক্ষা করলে স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিওর বা বাম কক্ষ দুর্বল হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

প্যানিক অ্যাটাক

এটি হঠাৎ অত্যধিক ভয় বা আতঙ্কের আক্রমণ, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে তীব্র হয়। সাধারণত মানসিক চাপ, পরীক্ষা, আবেগগত সমস্যা বা কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই এটি ঘটতে পারে।

প্রাথমিক লক্ষণ

১. দ্রুত বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন ২. মাথা ঘোরা, হালকা মাথা লাগা ৩. ঘাম, কাঁপুনি, বুকে ব্যথা ৪. আতঙ্ক বা নিয়ন্ত্রণ হারানোর অনুভূতি

ডা. কেশব আর আরও বলেন, বারবার দ্রুত হৃৎস্পন্দন হওয়া মানেই এটি অ্যানজাইটি নয়। অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন গুরুতর এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে, তাই তা দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার দাবি, প্যানিক অ্যাটাক প্রাণঘাতি নয়, তবে জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করতে পারে এবং প্রয়োজনে থেরাপি, স্ট্রেস কমানো বা ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।

মোটকথা

হঠাৎ বা নিয়মিত দ্রুত হৃৎস্পন্দন হওয়া কখনোই হালকাভাবে নেওয়ার বিষয় নয়। লক্ষণগুলো প্যানিক অ্যাটাক বা অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন যেকোনো একটি হতে পারে। তাই প্রথম ধাপ হলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসিজি বা ইকোর মতো অন্যান্য টেস্ট করা। দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা নিলে গুরুতর জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

টম ক্রুজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অনিল কাপুর

স্বর্ণের দামে রেকর্ড পরিবর্তন, অবাক ব্যবসায়ীরাও

প্রধান উপদেষ্টা সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন কর্নেল অলি ও রেদোয়ান আহমেদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ

যে কারণে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নানকের, মিলছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

ইউক্রেনের ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন শত শত রুশ

এখন জাতীয় পার্টিকে রক্ষার দায়িত্ব বিএনপির: শামীম পাটোয়ারী

ট্রেনে চীন গেলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম

সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করায় প্রেমিকাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে হত্যা

দোয়া চেয়ে মেঘমল্লারের পোস্ট, কমেন্ট করলেন হাসনাত

১০

স্কুল মাঠে মেলার নামে ‘লটারি’ বাণিজ্য, বারান্দায় হচ্ছে অ্যাসেম্বলি

১১

ব্রাজিল দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য নেইমারের

১২

সশরীরে আর মনে হয় ক্যাম্পেইন করতে পারব না : মেঘমল্লার

১৩

গরমের মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস

১৪

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল প্রশ্নে হাইকোর্টের রায় ঘোষণা শুরু

১৫

জীবিত থাকতে নিজের কবরের জায়গা নির্ধারণ করা কি জায়েজ?

১৬

অনুশীলনে প্রতিদিন ১৫০ ছক্কা হাঁকানোর দাবি করা ক্রিকেটারের অবসর ঘোষণা

১৭

বিমানবন্দরে স্টাইলিশ লুকে দীপিকা, ভিডিওতে মুগ্ধ ভক্তরা

১৮

আফগানিস্তানে ভূমিকম্প : দুর্গম এলাকায় উদ্ধারকর্মীদের পৌঁছানোই চ্যালেঞ্জ

১৯

কার্লসেনকে হারানো মুগ্ধ অর্থ সংকটে

২০
X