

সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি নিজেকে ক্লান্ত, অবসন্ন ও নিস্তেজ মনে হয়, তাহলে সেটি শুধু ঘুমের ঘাটতি বা মানসিক চাপের কারণে নয়, হতে পারে আপনার শরীরে আয়রনের পরিমাণ মারাত্মকভাবে কমে গেছে! আয়রন শরীরে অক্সিজেন পরিবহন, শক্তি উৎপাদন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সচল রাখার জন্য অপরিহার্য। অথচ, অজান্তেই আমরা প্রতিদিন কিছু ছোট কিন্তু গুরুতর ভুল করে থাকি, যা শরীরের আয়রনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের চারটি অভ্যাস এড়িয়ে চললেই এই ঘাটতি রোধ করা সম্ভব।
১. আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া
খাদ্যতালিকায় আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের অভাব শরীরে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নিরামিষভোজী বা ভেগানদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরও বেশি। নিয়মিত পালংশাক, ডিম, মাছ, মাংস, কলিজা, ছোলা, মসুর ডাল বা আয়রন-সমৃদ্ধ শস্য না খেলে শরীরে রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে।
২. খাবারের পরপরই চা বা কফি পান
খাবারের পর এক কাপ চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে, কিন্তু এটি আয়রন শোষণের সবচেয়ে বড় বাধা। কারণ, চা ও কফিতে থাকা ট্যানিন এবং পলিফেনল অন্ত্রে আয়রনের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে তার শোষণ প্রক্রিয়া নষ্ট করে দেয়। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, খাবার খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর চা বা কফি পান করতে।
৩. হজমের সমস্যাকে উপেক্ষা করা
গ্যাস্ট্রাইটিস, সিলিয়াক ডিজিজ বা আইবিএসের মতো হজমজনিত সমস্যা শরীরে পুষ্টি শোষণকে ব্যাহত করে। ফলে আয়রনের ঘাটতি দ্রুত বাড়ে। তাই দীর্ঘদিন ধরে বদহজম, পেটব্যথা বা ফাঁপা ভাব থাকলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৪. প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিনির্ভরতা
ফাস্টফুড, সাদা রুটি, চিপস বা অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করে। এসব খাবার পেট ভরালেও রক্তের গঠন ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক নয়। তাই খাদ্যতালিকায় রাখুন প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার— যেমন শাকসবজি, ফলমূল, সম্পূর্ণ শস্য ও বাদাম জাতীয় খাবার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়রনের ঘাটতি মোকাবিলায় নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা, সুষম খাবার খাওয়া ও সঠিক জীবনযাপন বজায় রাখাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তারা বলেন, ছোট ছোট পরিবর্তনই শরীরকে প্রাণবন্ত ও কর্মক্ষম অবস্থায় ফেরাতে পারে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান টাইমস
মন্তব্য করুন