

ওটস আজকাল হেলদি ব্রেকফাস্টের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। পুষ্টিকর ও সহজলভ্য এই খাবারকে অনেকে দুধ, ফল বা সিডস মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন। কেউ স্মুদি বানান, কেউ আবার পোহা বা খিচুড়ির মতো স্টাইলে নিজেদের মতো করে খান। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ, যা দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন শুধু ওটস খাওয়া সবসময় শরীরের জন্য ভালো নয়।
ভারতের মণিপাল হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান পবিত্রা এন রাজ জানান, অতিরিক্ত ওটস খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে যা অনেকের জানা নেই। চলুন জেনে নিই, কেন প্রতিদিন ওটস খাওয়া শরীরের জন্য সবসময় ঠিক নাও হতে পারে—
১. গ্লুটেন সেনসিটিভিটির ঝুঁকি
ওটস স্বাভাবিকভাবে গ্লুটেন-মুক্ত হলেও, অনেক সময় এগুলো সেই জায়গায় প্রক্রিয়াজাত হয় যেখানে গম বা বার্লি-ও থাকে। ফলে ক্রস-কন্টামিনেশনের কারণে গ্লুটেন মেশে যেতে পারে। সিলিয়াক ডিজিজ বা গ্লুটেন অ্যালার্জি থাকলে এটি পেটে প্রদাহ, অস্বস্তি ও অন্যান্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শুধু সার্টিফায়েড গ্লুটেন-ফ্রি ওটস বেছে নিন।
২. গ্যাস ও হজমের সমস্যা
ওটসে প্রচুর ফাইবার থাকায় হজমে সাহায্য করে। তবে যাদের হজমের অভ্যাস কম, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওটস খাওয়া গ্যাস, পেট ফুলে যাওয়া বা ব্যথা তৈরি করতে পারে। ডা. রাজ বলেন, ‘শুরু থেকেই ওটস রোজ ডায়েটে রাখবেন না। ধীরে ধীরে ফাইবার ইনটেক বাড়ান এবং একসাথে বেশি খাবেন না। শরীর কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তা লক্ষ করুন।’
৩. মিনারেলস শোষণে বাধা
ওটসে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড শরীরের ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক শোষণে বাধা দিতে পারে। দীর্ঘদিন নিয়মিত খেলে খনিজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ডা. রাজ পরামর্শ দিয়েছেন, ‘ওটস রান্নার আগে ভিজিয়ে রাখলে বা ফারমেন্ট করলে ফাইটিক অ্যাসিড কমে যায়। এতে পুষ্টি আরও ভালোভাবে শোষিত হয়।’
৪. ওজন বৃদ্ধি
ওটস সাধারণত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কিন্তু অতিরিক্ত খেলে ক্যালোরিও বাড়ে। প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৩৭৯ ক্যালোরি থাকে। তাই প্রতিদিন বড় বাটি ভর্তি খাওয়ার চেয়ে ছোট ছোট ভাগে খাওয়া ভালো।
৫. পুষ্টির ঘাটতি
শুধু ওটস খেলে প্রোটিন, ভিটামিন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই ব্যালেন্স বজায় রাখতে ব্রেকফাস্টে ফল, ডিম, দই বা শাকসবজি রাখাই উত্তম।
সপ্তাহে কতদিন খাওয়া উচিত?
ডা. পবিত্রা রাজ বলেন, ‘ওটস সপ্তাহে ২-৩ বার খাওয়া যেতে পারে। এতে উপকারও পাবেন, আবার শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হবে না।’
ওটসের কিছু উপকারিতা
১. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও খারাপ কোলেস্টেরল কমায়
২. শক্তি বাড়ায় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে
৩. রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
৪. হজম ভালো রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
সূত্র : দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন