রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে একদিনে ৭০টিরও বেশি এন্ডোসকপি করানো হয়েছে। এই এন্ডোসকপি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে হাসপাতালটিতে আকস্মিক পরিদর্শনে যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিম। এ সময় বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
বিশেষজ্ঞ বলছেন, একদিনে ৭০টি এন্ডোসকপি এটা অস্বাভাবিক। এতে করে সব রোগীর পরিপূর্ণ মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। তবে চিকিৎসকের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে এন্ডোসকপি করানোর সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। এ ছাড়া একটি আদর্শ এন্ডোসকপি করতে ৫ থেকে ৭ মিনিটের সময় প্রয়োজন। তা ছাড়াও সব রোগীর জন্য এ ধরনের পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয় না।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সংবাদমাধ্যমকে জানান, আজকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ ল্যাবএইড হাসপাতালে পরিদর্শন যান তিনি। সেখানে এন্ডোসকপির রেকর্ড দেখেন, গত বছরের অক্টোবরে একদিনেই ডা. স্বপ্নীলের নেতৃত্বে ৭০টিরও বেশি এন্ডোসকপি করা হয়েছে।
ল্যাবএইড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিক করেছি সারা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আমি নিজে সরজমিনে দেখবে। সেটার অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালে এসেছি। আজ সকালেও আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ পরিদর্শন করেছি। গতকালও আমি ৩টা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। ল্যাবএইডে যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সাথেও কথা বলেছি। এ ক্ষেত্রে আমার যেটা পর্যবেক্ষণ সেটা হচ্ছে উনাদের আরও যত্নশীল হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওনাদের যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে কোয়ান্টিটি না বাড়িয়ে কোয়ালিটির দিকে নজর দিতে হবে। এন্ডোসকপি, আলট্রাসনোগ্রাফি এসব একসঙ্গে ৭০টি না করে তা কমিয়ে মানসম্মতভাবে করতে হবে। গুণগত মান বজায় রাখতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সামন্ত লাল সেন বলেন, চিকিৎসায় কোনো নেগ্লেজেন্সি (অবহেলা) আমি মেনে নেব না। মানুষের জীবন কিন্তু একটাই। চলে গেলে আর আসে না।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ল্যাবএইড হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মেডিকেল চেকআপ রুম, এন্ডোসকপি ও কলোনস্কপি বিভাগ, সিসিইউ বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ সরজমিনে পরিদর্শন করেন। তাছাড়া রেডিওলজিস্টসহ মেডিকেল কনসালটেন্টদের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন।
এরপর মন্ত্রী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিসহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করে রোগী এবং ডাক্তারদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেন এবং ডকুমেন্টেশন পদ্ধতি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না দেখতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করেন।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডকুমেন্টেশন ব্যবস্থা ভালো হতে হবে। ঠিকমতো রোগীর ডকুমেন্টেশন নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেটার সমাধান করা সহজ হয়। এখানকার ডকুমেন্টেশন ব্যবস্থা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। ওনাদের প্রতি আমার মেসেজ রোগীর প্রতি আরও যত্নশীল হতে হবে, বিলটাও যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে।
মন্তব্য করুন