অনেকেই লো প্রেশারে ভুগে থাকেন। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ ব্লাড প্রেশার কমে যায়। যার ফলে দেখা দেয় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা। এ ক্ষেত্রে রোগী চোখে ঝাপসা দেখেন, মাথা ঘোরায় কিংবা অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। তবে চিকিৎসকরা প্রেশার কমে গেলে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এজাজ হোসেন কালবেলা অনলাইনকে বলেন, লো প্রেশারের সমস্যায় ভুগলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। রক্তশূন্যতা দূর করে এমন খাবার খেতে পারেন। এ ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং বিশ্রামে থাকুন।
অনেক সময় প্রেশার বাড়ার ও কমার লক্ষণগুলো একই রকম হয়ে থাকে। সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মিমি মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিমি মার্কারির নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়।
হাইপোটেনশন বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা নানা কারণে হতে পারে। বিশেষ করে দুশ্চিন্তা, গর্ভাবস্থা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, পানির ঘাটতি, রক্তস্বল্পতা, পুষ্টির অভাব, কম পরিমাণে লবণ খাওয়া ইত্যাদি কারণেও নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে।
দীর্ঘদিন যদি আপনি লো ব্লাড প্রেশারে ভুগতে থাকেন; তাহলে আপনার মস্তিষ্কে, হার্টে বা কিডনিতে সাময়িক বা স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রথম থেকেই এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।
# রক্তশূন্যতা। # কোনো কারণে পানিশূন্যতা হওয়া। # ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া। # খাবার ঠিকমতো বা সময়মতো না খাওয়া। # ম্যাল অ্যাবজরবশন বা হজমে দুর্বলতা। # কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা। # শরীরে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা।
# মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া। # মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। # বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা। # চোখে অন্ধকার দেখা বা সরষে ফুলের মতো দেখা বা চোখে ঝাপসা দেখা। # শারীরিক দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদগ্রস্ততা। # কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা। # ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া। # খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া। # অস্বাভাবিক দ্রুত হৃৎস্পন্দন। # নাড়ি বা পালসের গতি বেড়ে যাওয়া।
# নিম্ন রক্তচাপের ভুক্তভোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকবেন না। # অনেকক্ষণ ধরে বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে ও ধীরে ধীরে উঠুন। # ঘনঘন হালকা খাবার খান। বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে। # পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। # খাবার সময় পাতে এক চিমটি করে লবণ খেতে পারেন। # দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় গ্লুকোজ ও স্যালাইন রাখুন।
লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। যদি শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়, তাহলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই লো প্রেশার ঠিক হয়ে যায়। তবে যাদের দীর্ঘমেয়াদি নিম্ন রক্তচাপ আছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মন্তব্য করুন