বন্যাদুর্গত এলাকা ত্রাণ, রান্না করা খাবার, ওষুধ ও মেডিকেল সেবাসহ বিভিন্নরকম সহযোগিতার জন্য বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রহকৃত অর্থের পরিমাণ মোট ১১ কোটি ১০ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৬৯ টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা এবং অবশিষ্ট রয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭৭৫ টাকা। এ ছাড়া প্লাটফর্মটি বন্যাদুর্গত এলাকায় গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯১ ট্রাক ত্রাণ পাঠিয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ডাকসু এবং সেন্ট্রাল ফিল্ডে গণত্রাণ কার্যক্রম চালানো হয়েছে। প্রথমিকভাবে সংগ্রহীত অর্থ, রসদ দিয়ে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। পরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় শুকনো খাবারের বদলে ভারী খাবারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর পরিপেক্ষিতে আমরা ২৮ আগস্ট থেকে গণরান্না কর্মসূচি শুরু করি। যার মাধ্যমে আমরা আশ্রয়কেন্দ্র এবং দুর্গম অঞ্চলে চাল-ডালের প্যাকেজ পাঠিয়েছি। আমাদের এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞে প্রতিদিন প্রায় ১০০০ থেকে ১২০০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবী দিন রাত ক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
এতে বলা হয়েছে, গত ২২ আগস্ট থেকে ০৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯১ টি ট্রাক বন্যাকবলিত অঞ্চল গুলোতে পাঠানো হয়। আমরা বেসরকারি এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার এর মাধ্যমেও দুর্গম অঞ্চলগুলতে ত্রাণ সহয়তা পাঠিয়েছি।
মোট সংগ্রহের পরিমাণ জানিয়ে এতে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ০৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নগদ অর্থ, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যাংকিং মাধ্যমে আমাদের মোট সংগ্রহ হয়েছে ১১ কোটি ১০ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৬৯ টাকা।
ব্যয়ের ব্যাপারে বলা হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণত্রাণ এবং গণরান্না কর্মসূচি বাবদ আমাদের খরচ হয়েছে এক কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা। এর মধ্যে চিনি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা, চিড়া ১৬ লাখ ৮৭ হাজার ৪০০ টাকা, পানি এক লাখ ৭৬ হাজার টাকা, কয়েল পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, কাটার এক হাজার ৬২০ টাকা, ডাল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা, ড্রাই কেক ২৪ হাজার ৭২০ টাকা, ফিটকিরি এবং অন্যান্য জিনিসি এক লাখ এক হাজার ২৩০ টাকা।
গণ রান্নার প্রথম ব্যাচে সাত লাখ ৫৮ হাজার ৪২০ টাকা, সাবান, শ্যাম্পু, শিশুর খাদ্য এবং অন্যান্য জিনিস ৯ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৫ টাকা, ব্যাগ ৮০ হাজার ৮৬০ টাকা, বস্তা, ক্যারারেট এবং মোমবাতি দুলাখ ৮৩, হাজার ৪৮০ টাকা, নগদ সহায়তা আট লাখ ৯৬ হাজার টাকা, চাল এক লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা, খাবার ১২ লাখ ১৩ হাজার ০৩০ টাকা, গুড় ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৮ টাকা, মুড়ি ১৪ লাখ ১১ হাজার ৫০৪ টাকা, তেল: ৮৭ হাজার টাকা, পেঁয়াজ ৫০ হাজার ৬০২ টাকা, প্যাকেট বিস্কুট তিন লাখ ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা, পলি দুলাখ ৪৪ হাজার ২৫৫ টাকা, বস্তা, দড়ি এবং স্টেশনারি তিন লাখ চার হাজার ৭৮৪ টাকা, সুতলি ও স্টেশনারি ৯ হাজার ৭৫১ টাকা, খেজুর: ৩৯ লাখ ২৯ হাজার ৩১০ টাকা, শ্রমিক এবং স্টেশনারি ৪৪ হাজার টাকা, টর্চ এবং লাইটার এক লাখ ১২ হাজার টাকা, মেডিকেল ক্যাম্প এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্টেশনারি ৬৪ হাজার ৭৭০ টাকা, পরিবহন এবং শ্রম ৭৭ হাজার ৬০০ টাকা এবং হাতুড়ি, হ্যান্ড মাইক, আইডি কার্ড ৩৯ হাজার ৬২০ টাকা।
অবশিষ্ট অর্থের বিষয়ে জানানো হয়, আমাদের ফান্ডে বর্তমানে রয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ৭৭৫ টাকা। এই টাকা আমাদের সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের দ্বারা পরিচালিত জনতা এবং সোনালি ব্যাংকের একাউন্টে জমা রয়েছে। আমাদের এই অর্থ আমরা আগামীতে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছি। এই অর্থ কিভাবে এবং কাদের মাধ্যমে ব্যবহৃত হলে সর্বোচ্চ মানুষের উপকার হবে সেই বিষয়য়ে স্থানীয় এবং বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পরামর্শ আহ্বান করছি। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এই অর্থগুলো ব্যবহার করা হবে।
মন্তব্য করুন