বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৭:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিআরটিসিতে এখন মারিং কাটিং মিসিং নেই : চেয়ারম্যান

বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনে (বিআরটিসি) এখন দুই নম্বর চাকা লাগিয়ে এক নম্বরের বিল করার দিন শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটি চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বিআরটিসিতে মারিং-কাটিং-মিসিং সব এখন বন্ধ হয়েছে।’

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিআরটিসি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিআরটিসি চেয়ারম্যান বলেন, কিছু দুষ্কৃতিকারী, বিশ্বাসঘাতক উন্নয়নের চাকা বাধাগ্রস্ত করতে বিআরটিসিকে পেছনে টেনে ধরে রাখতে চায়। এসব ঘটনার পেছনে প্রতিষ্ঠানের কিছু লোকজনও জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিআরটিসিকে কোনো অবস্থাতেই পেছনে যেতে দেব না। এক ভাগ অনিয়ম বরদাশত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

আরও পড়ুন : ড. ইউনূসের আবেদন খারিজ, শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার বিচার চলবে

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। সত্য কথা আমার বিরুদ্ধেও লেখা যাবে। প্রতিষ্ঠানে এক সময় রিকশাচালক ও সবজি দোকানদারদের নিয়োগ দেওয়া হতো। আমরা অদক্ষদের চাকরি থেকে বিদায় না করে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলেছি।’

সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এক সময় বিআরটিসিতে নানা সংকট ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পেছনের সব জঞ্জাল আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠেছি। আগামী তিন বছর নতুন গাড়ি না আসলেও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হবে না।’

কল্যাণ তহবিল নীতিমালা করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, বদলি নীতিমালা করা হবে। বিআরটিসির কোনো কর্মচারী এখন চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে না। কেউ মারা গেলে দাফনের জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হবে। অবসরে যাওয়া ৫০০ জনের বকেয়া ১২০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী কেউ অবসরে গেলে এক মাসের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে। ডিপোগুলোতে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়িতে ভিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার ও সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সব ডিপোতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যায়।

আরও পড়ুন : উন্নয়ন নিশ্চিতে লিঙ্গ সমতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে : স্পিকার

চেয়ারম্যান বলেন, ‘অকারণে অর্থ ব্যয় করিনি বলেই অনেকেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে নতুন ৯০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ৩৪টি ইউনিটের জন্য আরও ১৮ হাজার জনবলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিআরটিসি বাসে আগামী মাসে র‌্যাপিড পাস চালু হবে। রাজধানীতে চলা আটটি বাসে চালু হয়েছে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠানের আয়ের অর্থ পকেটে ঢুকানো বন্ধ করা হচ্ছে।

বিআরটিসিতে স্বচ্ছ নিয়োগ হচ্ছে দাবি করে চেয়ারম্যান বলেন, এক সময় বিআরটিসিতে ছয় মাসের বেতন বকেয়া ছিল। দীর্ঘ সময় পর প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখেছে। এখন প্রতি মাসের এক তারিখে বেতন দেওয়া হচ্ছে। ২৩ বছর পর প্রতিষ্ঠানের শান্তি-বিনোদন ভাতা চালু হয়েছে। বর্তমানে জনবল চার হাজার, দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন ৮০০ জন।

আরও পড়ুন : পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩ জনের বিচার শুরু

৫০০ ট্রাকে সার ও খাদ্য পরিবহনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তেলের মূল্যবৃদ্ধির সময় আমরা সেবা বন্ধ করিনি। দুই কোটি টাকা লস দিয়ে ট্রাকে সারা দেশে সার সরবরাহ করা হয়েছে।’

মিথ্যা ও অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি ছাড়ার মানুষ নই। জেলায় জেলায় আমাদের গাড়ি চলতে কেউ বাধা দেয় না। নতুন আরও এক হাজার বাস হলে ভালো হতো।’ ইলেকট্রিক বাস ও নতুন ট্রাক আনতে প্রকল্প নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

দক্ষ চালক তৈরিতে ২৪টি ট্রেনিং সেন্টারে বছরে ২০ হাজার চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুই বছর পর এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০ হাজারে। ৫০০ নতুন বাস হলে আগামী তিন বছরের মধ্যে বিআরটিসি লিজ প্রথা থেকে বেরিয়ে আসবে। বর্তমানে বান্দরবান ছাড়া সব জেলায় বিআরটিসি ১২০০ বাস সেবা দিচ্ছে। আন্তঃজেলার ১৬৭ রুটে প্রতিষ্ঠানের সেবা চালু রয়েছে। সব মিলিয়ে ২০৮টি রুটে বাস চলছে।

তিনি জানান, ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

২০১৫-২১ সাল পর্যন্ত চালক ছাড়া বিআরটিসিতে কোনো নিয়োগ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে দীর্ঘ সময় সিএ ফার্ম দিয়ে প্রতিষ্ঠানের অডিটও বন্ধ ছিল। তবে অডিট আপত্তির বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

তিনি জানান, আগে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো না। হলে বিআরটিসি আরও এগিয়ে যেত। গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল নিয়োগ হতো না। এক সময় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের পিও পদে বাসের হেলপার দায়িত্ব পালন করতেন বলেও জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১০

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১১

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১২

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১৩

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

১৪

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

১৫

নানা আয়োজনে গাকৃবিতে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

১৬

বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে যা বললেন তামিম

১৭

রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু বুধবার

১৮

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ

১৯

জমি রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়েরের শেষ সময় সেপ্টেম্বরে

২০
X