মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পহেলা বৈশাখে কারা অধিদপ্তরের বর্ণাঢ্য আয়োজন

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি। ছবি : কালবেলা
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি। ছবি : কালবেলা

বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে যেমন আনন্দের জোয়ার বইছে, তেমনি ব্যতিক্রম নয় দেশের কারাগারগুলোও। বাংলা ১৪৩২ সনের প্রথম দিন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর দেশজুড়ে আয়োজন করেছে হৃদয়ছোঁয়া ও বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা।

কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেনের নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে দেশের কেন্দ্রীয় ও প্রতিটা জেলা কারাগারে সকাল ৯টায় একযোগে আয়োজন করা হয় বর্ষবরণ ও পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রা। বন্দি, কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এই শোভাযাত্রা কারাগার প্রাঙ্গণকে পরিণত করে এক উৎসবমুখর মিলনমেলায়।

কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখের আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারাগারগুলো ফেস্টুন, রঙিন কাপড়, আলোকসজ্জা ও বিভিন্ন লোকজ উপাদান দিয়ে সাজানো হয়, যাতে তৈরি হয় একটি পূর্ণাঙ্গ উৎসব পরিবেশ।

বন্দিদের জন্য দিনটি ছিল বিশেষ আয়োজনমুখর। সকালের নাশতায় পরিবেশন করা হয় পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, আলু ভর্তা ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী খাবার। দুপুরে দেওয়া হয় পোলাও, মাংস, ডিম, মিষ্টি ও বাহারি পদের খাবার। বিকেলবেলায় প্রতিটি কারাগারে অনুষ্ঠিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বন্দিদের অংশগ্রহণে গান, কবিতা, আবৃত্তি, নাটক ও লোকনৃত্যের মাধ্যমে আয়োজনটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।

কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যও রাখা হয় আলাদা আয়োজন। খেলাধুলা, প্রতিযোগিতা, র‍্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা- সব মিলিয়ে তাদের জন্যও ছিল এক আনন্দঘন অভিজ্ঞতা।

আত্মীয়-স্বজনদের জন্য ছিল আলাদা ব্যবস্থাপনা। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা স্বজনদের বরণ করে নেওয়া হয় আন্তরিকতা ও মর্যাদার সঙ্গে। কারা কর্তৃপক্ষ আগত দর্শনার্থীদের মাঝে মিষ্টান্ন বিতরণ করে, যাতে উৎসবের অংশীদারিত্ব সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জে আয়োজন ছিল অনন্য। সকাল ৯টায় র‍্যালি ও বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় দিনের কার্যক্রম। বন্দিদের মাঝে বিতরণ করা হয় পান্তা-ইলিশ ও ফলমূলসহ বাহারি খাবার। কারা মাঠে আয়োজন করা হয় লোকজ খেলাধুলা, ঘোড়ার গাড়ি প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকগানের আসর। বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধারণ করে কারাগারজুড়ে নির্মিত হয় এক টুকরো মিনি বাংলার প্রতিচ্ছবি।

এই আয়োজন নিছকই উৎসব উদযাপন নয়- বরং এটি প্রমাণ করে, বন্দিরাও এই সমাজেরই অংশ। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে তাদের মানসিক বিকাশ, সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ এবং নতুন জীবনের প্রত্যাশা জেগে ওঠে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অভিনেত্রী জাহানারা ভূঁইয়া মারা গেছেন

ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখা ড্যাবের নতুন দায়িত্বে ডা. ফারুক

এনসিপির আরও চার নেতার পদত্যাগ 

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিসের শ্বশুর লুৎফর রহমান

ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণার বিধিমালা প্রকাশ

হাসনাতকে ‌‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বললেন রুমিন ফারহানা

বিজিবির কাছে ৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

চুরির অভিযোগ, গণপিটুনিতে যুবক নিহত

সংবিধানের মূলনীতি থেকে আমরা সরে যাচ্ছি : ড. কামাল হোসেন

রাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকারের দাবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১০

চট্টগ্রামের মিষ্টি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, মধুবন ফুডকে জরিমানা

১১

আশুলিয়ায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

১২

জাবির সাবেক সহকারী প্রক্টর জনি রিমান্ডে

১৩

প্রাণনাশের শঙ্কায় ভুগছেন ফজলুর রহমান, চাইলেন নিরাপত্তা

১৪

বাংলাদেশ সফর নিয়ে ইসহাক দারের প্রতিক্রিয়া

১৫

অপ্রতুল বিনিয়োগের কারণে চিকিৎসার মান কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছায়নি : ডা. রফিক 

১৬

মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানানো থালাপতির উত্থানের গল্প

১৭

চট্টগ্রামের নগরায়ণ সংকটে শহরবাসী, মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন নেই

১৮

মুন্সীগঞ্জে পুলিশ ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাপক গোলাগুলি

১৯

ইসরায়েলে সামরিক অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা কতটুকু?

২০
X