বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সবাইকে সুকুমার বৃত্তির চর্চা করার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। পাশাপাশি দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে, সব পরিস্থিতিতে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১১ মে) বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘বুদ্ধপূর্ণিমার আলোকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথেরের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল ভিরাক্কোদি প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মৈত্রী, সম্প্রীতি সমাজকে বিকশিত করে। ঘৃণা, হিংসা সমাজকে ধ্বংস করে। বাংলাদেশ বহু বৈচিত্র্যিক দেশ, বৈচিত্র্যের মধ্যেই আমরা ঐক্যের ডাক দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, অন্য ধর্মকে ধ্বংস করার মানসিকতা জঘন্য, এটি ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকে। আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হয়ে আছে। তবে কখনো কখনো কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, কিন্তু সাধারণ মানুষ এসব নিজেদের মধ্যে ধারণ করে না। মাঝেমধ্যে সাম্প্রদায়িক বিষধর সাপ ফণা তোলে, আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছর থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বুদ্ধ পূর্ণিমার অন্তত তিন মাস আগে সব বিহারের সাংস্কৃতিক ফোরামের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। পাশাপাশি বিহারগুলোর সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফারুকী বলেন, খুব দ্রুতই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম থেকে ক্ষুদ্র শব্দটি বাদ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত ফাইল উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছে।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, গৌতম বুদ্ধের বাণী ও শিক্ষা সর্বজনীন ও সর্বকালের। তার বাণী প্রতিনিয়ত আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বর্তমান পৃথিবীতে বুদ্ধের বাণীর আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের দামামা বাজছে। এই সময়ে বুদ্ধের বাণী আমাদের ঐক্যবদ্ধ করতে সহযোগিতা করে। আমাদের পরস্পরের হাত ধরে থাকা অত্যন্ত জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় এ ধরনের আয়োজনের পাশে থাকতে চায়।
সুকোমল বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সংস্কৃতিতে এক ও অভিন্ন। আমাদের সবাইকে শান্তির জন্য বুদ্ধের পরম শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি প্রবারণা পূর্ণিমায় একদিন সরকারি ছুটি ঘোষণার জন্য সংস্কৃতি উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান করেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা সরকারকে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারকে আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। সভায় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি রাজীব কান্তি বড়ুয়া বাংলা ভাষার প্রাচীন গ্রন্থ চর্যাপদকে একুশে পদক দেওয়ার জন্য সংস্কৃতি উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন