ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদন করার পরেও নীতি-নির্ধারকদের প্রভাবিত করে তামাক কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে মহাখালীর ডিওএইচএস আবাসিক এলাকায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই এলাকা থেকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সিগারেট কারখানা অবিলম্বে অপসারণ করা জরুরি। একইসঙ্গে দেশে নতুন কোনো তামাক বা সিগারেটে কম্পানির অনুমোদন না দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট।
সোমবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘তামাক কোম্পানির কার্যকলাপ পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি : আইন শক্তিশালী করা জরুরি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংবিধানে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও, কতিপয় সরকারি সংস্থা সিগারেট কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে। মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় বিএটি’র কারখানা থেকে নির্গত তামাকের রাসায়নিকের কারণে বাতাস দূষিত হচ্ছে, শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তামাক পাতা আনা-নেওয়া এবং উৎপাদিত তামাক পণ্য সারাদেশে পরিবহনের কাজে বড় বড় ট্রাক-লরি চলাচলের কারণে ওই এলাকায় সড়কের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ছে। যা যানজট, শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণও সৃষ্টি করছে।
আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবাদী এবং তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো তামাক কোম্পানির অনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে আসছে। সিগারেট কম্পানির আগ্রাসন থেকে সুরক্ষায় অন্যতম রক্ষাকবচ বৈশ্বিক চুক্তি এফসিটিসির অনুচ্ছেদ ৫.৩ বাস্তবায়ন, তামাক কম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির অপব্যবহার বন্ধ, তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার এবং তামাক কম্পানির ২৫ শতাংশ শুল্ক পূর্ন:বহাল করার আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ সংশোধন করে তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যকে পুনরায় লাল তালিকাভুক্ত করা জরুরি। অনতিবিলম্বে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা মহাখালীর ডিওএইচএস থেকে বিএটির তামাক কারখানা অপসারণ করে সেখানে জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী পার্ক নির্মাণ ও দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি জানাই।
বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক একেএম মাকসুদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, বিইউএইচএস’র ডিপার্টমেন্ট অব অকোপেশনাল এন্ভারমেন্টাল হেলথ ফ্যাকাল্টি প্রফেসর এএফএম সরোয়ার, ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিটিস অব সোসাইটির টিম লিড মো. বজলুর রহমান, বিএনটিটিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সুশান্ত সিনহা প্রমুখ।
মন্তব্য করুন