আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) বিকালে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অর্ডিন্যান্স-২০২৫’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারের সব সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ দেশের শাসকরা যেন অত্যাচারী হয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন করতে না পারে, মানুষ যেন মামলার জটে পড়ে সর্বস্বান্ত না হয়, ব্যক্তি স্বাধীনতা যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, মানুষ যেন ‘ডিফাইন লিগ্যাল সিস্টেমে’ থাকতে পারে- এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, বিভিন্ন কমিশনের মাধ্যমে যেসব সংস্কার প্রস্তাব পাওয়া গেছে, সেগুলো থেকে আশু বাস্তবায়নযোগ্য শতাধিক প্রস্তাব চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করার কাজ শুরু করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে সিপিসি (দেওয়ানি কার্যবিধি), সাইবার সুরক্ষা আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইনসহ বিভিন্ন আইন সংশোধন করেছে। শিগগিরই জুডিশিয়াল সার্ভিসের নিয়োগ বিধিমালা ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে। গুম প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন বিষয়ক দুটি মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এগুলো আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও অনেক আইন সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রয়োজন (প্রধানত সংবিধান সংশোধন বিষয়ক) সেসব ক্ষেত্রে জুলাই চার্টারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। জুলাই মাসে এই চার্টার তৈরি হয়ে গেলে তার ভিত্তিতে বড় ধরনের সংস্কারগুলো করা সম্ভব হবে।
আসিফ নজরুল মনে করেন, আজকে আমাদের সমাজে সংস্কারের জন্য যে প্রত্যাশা বা চাপ তৈরি হয়েছে, সেটার তুলনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমা ও সরকার কাঠামো খুব যথোপযুক্ত না। তাই সরকারকে অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান পরিবর্তনের চেষ্টা করবে না।
সভায় খসড়া অধ্যাদেশটির বিভিন্ন ধারা ও উপধারা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট শিশির মনির, অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।
মন্তব্য করুন