নড়াইলের লোহাগড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দোকার মহিউদ্দীন ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ শহীদ হন। তার ছেলে বুলবুল খন্দোকারের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) বয়স জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বয়স সংশোধন করে জন্মসাল ১৯৮৩ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে বুলবুলের ভাগনে শাহনাজ মো. ফারুক গত ৪ মার্চ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বুলবুল খন্দোকার অবৈধ প্রভাব ও জালিয়াতির মাধ্যমে এনআইডিতে তার জন্মতারিখ ১৯৮৩ সালে সংশোধন করেছেন। তিনি দাবি করেন, বুলবুলের প্রকৃত নাম ছিল খন্দোকার নাছিরউদ্দীন এবং জন্মতারিখ ১৯৬৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। পরে তিনি নাম পরিবর্তন করে মো. বুলবুল খন্দোকার করেন এবং এনআইডিতে জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ২ ডিসেম্বর উল্লেখ করেন। ২০১৬ সালে তিনি আবার এনআইডি সংশোধন করে নাম রাখেন বুলবুল খন্দোকার, পিতার নাম মৃত খন্দোকার মহিউদ্দীন এবং জন্মতারিখ ১৯৮৩ সালের ১২ জুন করেন।
মো. ফারুক সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তার অভিযোগের অগ্রগতি জানতে যান। এ সময় তার কথা হয় প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার নানা ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ শহীদ হন। সুতরাং আমার মামার জন্ম ১৯৮৩ সালে হওয়া সম্ভব নয়। তিনি জালিয়াতি করে বয়স কমিয়ে চাকরি করছেন।
বুলবুল খন্দোকার ফোনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে বয়স সংশোধনের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বাবা একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, তিনি ১৯৭১ সালে শহীদ হন। আমার বয়স সংশোধনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানতেন।
জানা যায়, বুলবুল খন্দোকার ২০১৫ সালের ৫ নভেম্বর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে শর্তাধীন নিয়োগ পান এবং ১০ নভেম্বর তথ্য ও গবেষণা বিভাগে যোগ দেন। তিনি চাকরির জন্য এনআইডিতে জন্মতারিখ ১৯৮৩ সালের ১২ জুন উল্লেখ করেন। ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেন, যা পরে অনুমোদিত হয়।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করা হবে। মিথ্যা প্রমাণিত হলে সংশোধন বাতিল করে পূর্বের তথ্য পুনর্বহাল করা হবে।
সূত্র- আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন