দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১২০ জনেরও বেশি তরুণ জলবায়ু কর্মী, গবেষক, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী একত্রিত হতে যাচ্ছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট ক্যাম্প ২০২৫-এ। এটি একটি তরুণ-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ যা জলবায়ু শিক্ষা, নীতিনির্ধারণী সংলাপ, আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা এবং কমিউনিটিভিত্তিক কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
আগামী ৪ থেকে ৮ জুলাই নেপালের হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা নাগারকোটে হতে যাচ্ছে এই ক্যাম্প।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
নেপালের পরিবেশবিষয়ক সংগঠন ল্যান্ড ফর ফিউচার নেপাল’র সঙ্গে যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে বাংলাদেশের দুটি সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস) ও মিশন গ্রিন বাংলাদেশ। এই ক্যাম্প আয়োজনের সহযোগী হিসেবে থাকছে সিথ্রিইআর (ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়), আইসিআইএমওডি, ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ওসিআরইইডিএস, কাঠমাণ্ডু বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, জেটনেটবিডি, এসআরসিএল, গ্লোবাল ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড।
এ ছাড়াও বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিমান টিকিটে বিশেষ ছাড় দিয়ে এই উদ্যোগের এয়ারলাইন পার্টনার হিসেবে অংশগ্রহণ করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আন্তর্জাতিক জলবায়ু ক্যাম্পটিতে বাংলাদেশ থেকে ৮০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন গবেষক, পরিবেশ কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, তরুণ নেতা, শিক্ষার্থী ও উন্নয়নকর্মী। এর মধ্যে ২১ জন অংশগ্রহণকারী সম্পূর্ণ স্কলারশিপে নির্বাচিত হয়েছেন, যা একশনএইড বাংলাদেশ, জেটনেটবিডি, সিথ্রিইআর এবং আইসিআইএমওডি এর সহায়তায় দেওয়া হয়েছে। আরও ১৫ জন আংশিক অর্থায়ন পেয়েছেন।
ক্যাম্পে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে নেপাল সরকারের কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত মেন্টর ও বক্তা হিসেবে অংশ নিচ্ছেন।
আঞ্চলিক নীতিনির্ধারক, জলবায়ু বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদদের উপস্থিতিতে ক্যাম্পটিতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মেলন ও নবায়নযোগ্য শক্তি, অভিযোজন নীতি এবং তরুণ নেতৃত্বে উদ্ভাবন প্যানেল আলোচনা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি, ইকো-উদ্যোক্তা ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান বিষয়ে টেকসই জীবনের কর্মশালা, বৃক্ষরোপণ, টেকসই কৃষি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় বিষয়ে কমিউনিটি কার্যক্রম, পরিবেশ সচেতনতা ও সংহতি বৃদ্ধিতে ট্রেকিং ও ক্যাম্পফায়ার এবং সেরা উপস্থাপনা ও জলবায়ু যোগাযোগ উদ্ভাবনগুলোকে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যতম আয়োজক সংস্থ্যা সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এই ক্যাম্প শুধু একটি ইভেন্ট নয়, বরং এটি এক ধরনের আন্তঃসীমান্ত আন্দোলন যা একটি জলবায়ু-সচেতন প্রজন্ম গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি বলেন, জলবায়ু সহনশীলতা হতে হবে স্থানীয়ভাবে প্রোথিত এবং আঞ্চলিকভাবে ভাগাভাগি করা। এই ক্যাম্প সেই সম্মিলিত ভবিষ্যতের একটি পদক্ষেপ।
আন্তর্জাতিক ক্লাইমেট ক্যাম্প ২০২৫ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্তর্ভুক্তিমূলক, তরুণ-নেতৃত্বাধীন ও সমাধান-কেন্দ্রিক জলবায়ু কার্যক্রমের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আহসান রনি।
মন্তব্য করুন