দুর্নীতির তদন্ত চলাকালেই যুক্তরাজ্যে সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।
সংস্থাটি বলছে, জব্দের আদেশ কার্যকর হওয়ার আগেই যারা সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করছেন, তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে সেই বিক্রি ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার সরকারের মন্ত্রী-এমপি, সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। মামলার পাশাপাশি দেশে-বিদেশে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সংস্থাটি।
এমন সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শনিবার (১৯ জুলাই) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গার্ডিয়ান ও ও দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের যৌথ অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে তাদের মালিকানাধীন সম্পদ বিক্রি, বন্ধক বা হস্তান্তর করছেন। দেশটির জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, গত বছর সম্পদ বিক্রির অন্তত ২০টি আবেদন জমা পড়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তি লেনদেন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে, তখন যুক্তরাজ্যে তাদের সম্পদ বিক্রি, বন্ধক কিংবা হস্তান্তর করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে কেবল গত এক বছরে বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ লেনদেনের অন্তত ২০টি আবেদন জমা পড়েছে।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেছেন, সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য পেলে ওই সব সম্পদ বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে পদোন্নতি প্রদানে দুর্নীতির অভিযোগে শ্রম প্রতিমন্ত্রী (সাবেক) বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ও শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়া হলেও, তা দুদকের তফসিলভুক্ত নয়। ফলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মহাপরিচালক।
মন্তব্য করুন