কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শহীদদের আবাসন প্রকল্পে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪৫ গুণ বেশি

আবাসন প্রকল্প। ছবি : সংগৃহীত
আবাসন প্রকল্প। ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি ‘৩৬ জুলাই’ নামক একটি আবাসন প্রকল্পের ব্যয় বিশ্লেষণে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য গৃহীত এই প্রকল্পের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, প্রকল্পের বিভিন্ন উপাদানে ৩ থেকে ৪৫ গুণ বেশি ব্যয় দেখানো হয়েছে, যা সাধারণ জনগণের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আরসিসি পিলারের প্রকৃত মূল্য যেখানে ৯০০ টাকা, সেখানে সেটি ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকায়। এ ছাড়া, ২৫ লাখ টাকার লিফটের জন্য ধরা হয়েছে ৯২ লাখ টাকা, ১২ লাখ টাকার সাবস্টেশনের জন্য ৬৩ লাখ টাকা এবং ৯৫ হাজার টাকার পানির পাম্পের জন্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ প্রকল্পে ৪৫ গুণ বেশি ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর, চারগুণ বেশি ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বেড লিফট, সাবস্টেশন কেনা হচ্ছে পাঁচ গুণ, এমনকি পানির পাম্পও কেনা হয়েছে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি দামে।

এ ধরনের বাড়তি ব্যয় ধরেই ‘৩৬ জুলাই’ নামের এক ফ্ল্যাট প্রকল্পের প্রস্তাব আজ একনেক সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে প্রতিটি পদ ও স্তরেই রয়েছে অনিয়ম ও অস্বাভাবিক বাড়তি ব্যয়ের ছড়াছড়ি।

এ প্রকল্পটি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শুরু হলেও, এর ব্যয়ের অস্বাভাবিকতার জন্য বিভিন্ন কর্মকর্তারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নের চাপে এই ধরনের ভুল হয়েছে। তবে, কেন নিয়মিত যাচাই-বাছাই ছাড়াই এসব ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে, তার স্পষ্ট উত্তর কেউ দিতে পারেননি।

প্রকল্পের আওতায় ৮ শতাধিক ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৭৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, মাস্টারপ্ল্যান বা নকশা প্রণয়ন করা হয়নি বলে জানা গেছে। গত ১৬ জুন পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটির নানা জটিলতা তুলে ধরা হয়। সভায় প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়, যেমন ফ্ল্যাটের মালিকানা নির্ধারণ ও শহীদের উত্তরাধিকারী নির্ধারণের বিষয়।

সভায় উপস্থিত পরিকল্পনা কমিশনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন ও নির্দেশিকা থাকা আবশ্যক। এ ছাড়া, প্রকল্পের অর্জন ও সুবিধাভোগীদের তথ্যও থাকা জরুরি। কিন্তু এ প্রকল্পে এসব তথ্যের অভাব লক্ষ্য করা গেছে।

সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের আগে পরিবেশ ও ইকোসিস্টেমের ওপর প্রভাব, মাস্টারপ্ল্যান এবং বরাদ্দের লিখিত বিবরণ থাকা প্রয়োজন; কিন্তু এ প্রকল্পে সেগুলোর অভাব দেখা গেছে। তার মতে, প্রকল্পটি তাড়াহুড়ো করে নেওয়া হয়েছে এবং ডিপিপি সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রকল্প প্রণয়নে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকলেও এ প্রকল্পটি দ্রুতই অনুমোদিত হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি আরও জানায়, শহীদ পরিবারের জন্য প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি প্রায় চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে এবং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) পর্যায়ে এটি অনুমোদিত হবে।

-সূত্র : দৈনিক জনকণ্ঠ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী, দলগুলো একমত

ছাত্র ভর্তির নামে ঘুষগ্রহণ, অফিস সহকারী বরখাস্ত

সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে মাঝ আকাশে ‘ডুব’ দিল বিমান

হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকতাম : আমীর খসরু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ জন সাতদিনের রিমান্ডে

রাজ্জাককে নিয়ে স্ট্যাটাস সরিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন মাহিন

ছোট পর্দায় ‘তাণ্ডব’

একনেকে অনুমোদন পেল ঢাবির ২৮শ কোটির মেগা প্রকল্প

ভিয়েনার রেস্তোরাঁয় হিব্রু বলে বিপদে ইসরায়েলি মিউজিশিয়ান

৩০ সেকেন্ডের ঘূর্ণিঝড়ে সব লন্ডভন্ড

১০

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫ উড়োজাহাজ কিনবে সরকার

১১

সাগরে লঘুচাপ, ভারি বর্ষণ হতে পারে যেসব বিভাগে

১২

রাজধানীতে হেলে পড়ল বহুতল ভবন

১৩

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত : ডিএনএ পরীক্ষার পর কমলো মোট মৃত্যু

১৪

সপ্তাহে ২ দিন ছুটিসহ নিয়োগ দিচ্ছে র‍্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড

১৫

গাজা নিয়ে নিষ্ক্রিয় থাকা চলবে না, মুসলিম বিশ্বকে সতর্কবার্তা

১৬

ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক

১৭

ইসরায়েলির কান ছিঁড়ে ফেললেন এক সিরীয়

১৮

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা কতটি?

১৯

বিএনপি সচেতনতার সঙ্গে এগুচ্ছে : মির্জা ফখরুল

২০
X