সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে ছাত্র ভর্তির নামে একাধিক অভিভাবকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী খন্দকার মোর্শেদুল বারী লিয়নকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মজিদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মোর্শেদুল বারী লিয়নের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১৭ জুলাই থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জের সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলে ৭ ছাত্রকে ভর্তির কথা বলে তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে মোট ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা নেন অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মোর্শেদুল বারী লিয়ন।
তবে কোনো ছাত্রকেই ভর্তি করাতে পারেননি তিনি। তারপরও ওই ছাত্রদের স্কুলড্রেস পরে পরীক্ষায় অংশহগ্রহণ করতে বলেন লিয়ন। আর তখনই বিষয়টি সবার নজরে আসে। অপরদিকে ছাত্র ভর্তির কথা বলে ৩০ হাজার টাকা নিয়েও ভর্তি করেননি বলে আব্দুল খালেক নামে এক অভিভাবক লিয়নের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, অফিস সহকারী এর আগেও দুবার সাময়িক বরখাস্ত ছিল। চলতি বছরে নির্দেশনা ছিল ভর্তির বিষয়ে কোনো তদবির চলবে না। আপার লেবেলের তদবিরও গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু অফিস সহকারী গোপনে ভর্তির নামে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেয়। ভর্তির সময় পার হওয়ার পরও তার অফিসে লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে অভিভাবকরা টাকা ফেরতের জন্য চাপাচাপি করলে লিয়ন তাদের বাচ্চাদের স্কুল ড্রেস তৈরির পরামর্শ দেয়। সম্প্রতি পরীক্ষার মধ্যে এমন ৭ বাচ্চাকে ড্রেস পরে ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে দেয়। বিষয়টি আমাদের নজরে এলে ওই বাচ্চারা ভর্তি হয়েছে কি না জিজ্ঞেস করি।
তখন তারা বলে, লিয়ন আসতে বলেছে। তাদের কাছে বিস্তারিত শোনার পর অফিস সহকারী লিয়নকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সে ভুল স্বীকার করে। আমি ২ জুলাই তাকে শোকজ করি। পরে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লিয়নকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মোর্শেদুল বারী লিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, লিয়নকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের প্রতিনিধি ও দুজন শিক্ষককে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর তার বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন