মালয়েশিয়ায় কাজের প্রলোভনে ভ্রমণ ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের মানব পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি। লাখ লাখ টাকা খরচ করে দেশটিতে গেলেও কাজ না পেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, গত বছরের ৩১ মে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সরকার এখনো এই বাজার পুনরায় চালু করতে পারেনি। এর ফলে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছে কিছু চক্র। সাত মাসে চার শতাধিক কর্মী ভ্রমণ ভিসার নামে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে কেউ বিমানবন্দর থেকে ফেরত এসেছেন, আবার কেউ গ্রেপ্তার হয়ে সাজা ভোগ করে ফিরেছেন।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বৈধভাবে চালু করা সম্ভব না হলে এই অবৈধ প্রবাহ থামানো যাবে না।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানায়, বাজারটি চালু করতে হলে সিন্ডিকেটের শর্ত মেনে নিতে হবে। তবে মানব পাচার রোধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তারা জানায়।
আগামী ১১ আগস্ট শ্রমবাজার ইস্যুতে আলোচনা করতে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অভিবাসনসংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, এই বৈঠকের পর শ্রমবাজার উন্মুক্ত হতে পারে। এর আগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মালয়েশিয়া সফর এবং ঢাকায় দুই দেশের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অংশ নেন। কিন্তু সিন্ডিকেটসহ অন্য শর্তের কারণে বাজারটি চালু হয়নি।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘মালয়েশিয়ার সঙ্গে আগের সরকার চুক্তি করে রেখেছে যে তোমরা রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা দেবে, আমরা নির্ধারণ করব। এটি দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি, যেটিকে আমরা সিন্ডিকেট বলি। এখন সিন্ডিকেট না করতে হলে চুক্তি পরিবর্তন করতে হবে। সেটি আমাদের মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেই করতে হবে।’
ড. আসিফ নজরুল বলেন, মালয়েশিয়ার সরকার চুক্তি পরিবর্তন না করলে আমাদের দুটি পথ খোলা রয়েছে। একটি হচ্ছে তাদের কথা অনুযায়ী ২৫, ৫০ কিংবা ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো, অন্যটি মালয়েশিয়াকে জানানো যে আমরা কর্মী পাঠাব না।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য করুন