ভাষাসংগ্রামী, কবি, প্রাবন্ধিক এবং রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভিড় জমিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। তার মরদেহ সেখানে আনা হলে, সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মরদেহ বারডেম হাসপাতালে দান করা হবে।
কফিন শোকযাত্রার মাধ্যমে নেওয়া হবে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য আহমদ রফিক তার মরণোত্তর দেহ দান করে গেছেন।
প্রখ্যাত এই ভাষাসংগ্রামী বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) রাতে বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান এবং তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। আহমদ রফিক ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রাবন্ধিক ইতিহাসবিদ। তার শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা সমাজে গভীর প্রভাব রেখেছে। তাকে দেওয়া হয়েছে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তার অবদান অনন্য; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি প্রদান করা হয়।
২০১৯ সাল থেকে আহমদ রফিকের দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করলে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, তবে ফল আশানুরূপ হয়নি। ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন অবস্থায় ছিলেন। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকে। এই মহাপুরুষের অবদান ও জীবন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ভাষা ও সাহিত্য আন্দোলনের গুরুত্ব। আহমদ রফিকের মৃত্যুতে দেশ হারিয়েছে এক মহান ব্যক্তিত্বকে।
মন্তব্য করুন