আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা থালা-বাসন হাতে পূর্বঘোষিত ভুখা মিছিল করেছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শিক্ষক-কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে খালি থালা-বাসন নিয়ে শিক্ষা ভবন অভিমুখে এ মিছিল শুরু করেন। এতে হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন।
বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট মোড়ে এলে পুলিশ সেটি আটকে দেয়।
এ সময় শিক্ষক-কর্মচারীরা ‘হয়তো দাবি মেনে নে, নয়তো বুকে বুলেট দে’, ‘৫%–এর প্রজ্ঞাপন, মানি না মানব না’, ‘প্রহসনের প্রজ্ঞাপন, মানি না, মানব না’, ‘সি আর আবরার, আর নয় দরকার’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরুর আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
তিনি বলেন, ‘সরকার ৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া দিয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, এটা আমরা মানি না। আমরা মনে করি, এটা আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন থামবে না।’
শিক্ষকদের ভুখামিছিল আজ দুপুর ১২টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাতের কারণে ভুখা মিছিল শুরু করতে দেরি হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। আমরা মনে করি, বিএনপি এই দাবির প্রতি একমত পোষণ করেছে।’
দেলোয়ার হোসেন বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাদের বলেছেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মুখোমুখি অবস্থানে আছেন। সেখানে পুলিশের দুটি জলকামান ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন আছে।
এর আগে, আজ (রোববার) দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এরপর ১৩ অক্টোবর থেকে সারা দেশে পাঠদান বন্ধ রেখে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষকরা।
সরকার ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
মন্তব্য করুন