গত বছর ১ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৯২৯টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে। এর ফলে ইঁদুরের হাত থেকে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪২ টন ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। এসব ফসলের বাজারমূল্য প্রায় ৪৯৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর খামারবাড়িতে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান-২০২৩ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ফসল রক্ষায় বাস্তুতন্ত্রের কোনো ধরনের ক্ষতি না করে ইঁদুর প্রতিরোধের জন্য ১৯৮৩ সাল থেকে এই কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে অধিদপ্তর।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিবছর দেশে ইঁদুরের কারণে গড়ে ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি খাদ্যগুদাম, পাউরুটি ও বিস্কুট তৈরির কারখানা, হোটেল-রেস্তোরাঁ, পাইকারি ও খুচরা পণ্য বিক্রির দোকানে বিপুল পরিমাণে খাদ্য ইঁদুর নষ্ট করলেও তার কোনো হিসাব সরকারিভাবে করা হয় না।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, এই কর্মসূচির আওতায় মূলত কৃষকরাই ইঁদুর নিধন করে থাকেন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ইঁদুর নিধনকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। হিসাব রাখার জন্য তারা নিধনকৃত ইঁদুরের লেজ জমা দেন। এক্ষেত্রে একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থা হিসেবে কাজ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগ। এ বছর জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযানের প্রতিপাদ্য 'ইঁদুরের দিন হবে শেষ, গড়ব সোনার বাংলাদেশ'।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগের পরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে ইঁদুরের আক্রমণে বছরে উৎপাদিত আমন ধানের শতকরা ৫ থেকে ৭ ভাগ, গমের ৪ থেকে ১২ ভাগ, গোল আলুর ৫ থেকে ৭ ভাগ ও আনারসের ৬ থেকে ৯ ভাগ নষ্ট করে। সবমিলিয়ে ইঁদুর গড়ে মাঠ ফসলের ৫ থেকে ৭ শতাংশ ও গুদামজাত শস্যের ৩ থেকে ৫ শতাংশের ক্ষতি করে। সেচনালা নষ্ট করে ৭ থেকে ১০ ভাগ। এসব কারণে ধান উৎপাদনকারী প্রতিটি দেশে কৃষক, চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা ইঁদুরকে গুরুত্বপূর্ণ বালাই হিসেবে বিবেচনা করেন।
মন্তব্য করুন