আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি না মানলে প্রার্থিতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (৩ ডিসেম্বর) এ হুঁশিয়ারি প্রার্থীদের মাঝে প্রচার করতে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমের সদস্যসহ সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নির্বাচনী এজেন্টকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং ওই বিধান ভঙ্গের দায়ে প্রদেয় শাস্তি বিশেষ করে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলকরণের বিষয় অবগত করানো নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে সারা দেশে আরও ছয়জন প্রার্থীকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৯১(ক) এর (৫) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন থেকে অভিযুক্ত প্রার্থীদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছেন যশোর-৬ আসনের শাহীন চাকলাদার, নোয়াখালী-১ আসনের এইচ এম ইব্রাহিম, রাজশাহী-১ আসনের ওমর ফারুক চৌধুরী, ঢাকা-৭ আসনের মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, ফরিদপুর-১ আসনের শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, ফরিদপুর-৩ আসনের শামীম হক ও দিনাজপুর-৬ আসনের শিবলী সাদিক।
এসব প্রার্থীদের সকলেই মনোনয়ন পাওয়ার পর নিজ নিজ এলাকায় শোভাযাত্রা বড় বহর নিয়ে শোডাউন করে। পাশাপাশি দুজন নিজ নির্বাচনী এলাকায় সাদা-কালো এবং রঙিন পোস্টার লাগিয়েছে। এ ছাড়া এসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জনসংযোগকালে ভোট চাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী ২১ দিনের বেশি প্রচারণার সময় কোনো দল বা প্রার্থী পাবে না উল্লেখ করে বলা হয়, রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত বা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী আইন ও আচরণবিধির অর্থে প্রার্থী নন। নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ হবে একটি নির্বাচনী এলাকার জন্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করে প্রতীক বরাদ্দ করে প্রচারণার জন্য মাঠ উন্মুক্ত করার পর। তখন নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের সকলেই সমভাবে একেকজন প্রার্থী হবেন। সে সময় থেকে তাদের ক্ষেত্রে আচরণ বিধিমালা প্রযোজ্য হবে।
এতে আরও বলা হয়, প্রার্থীদের জন্য প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের সময় চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর তারিখের পূর্বে কোনো ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। ফলে এর পূর্বে কোনো নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে নির্বাচনী প্রচারণারও সুযোগ নেই। এর আগে গত শনিবার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ত্রিশজনের বেশি প্রার্থীকে শোকজ করে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা এর মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্যকোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। সে হিসেবে ১৫ ডিসেম্বরের আগে কেউই নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।
মন্তব্য করুন