বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী পুরুষের সমতার দাবি নিয়ে কলম আন্দোলনের মাধ্যমে উপমহাদেশের নারীদের জীবন পরিবর্তনের ধারার সূচনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামীকাল শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৩ এবং বেগম রোকেয়া পদক প্রদান উপলক্ষে দেওয়া আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩’ উদযাপন এবং ‘বেগম রোকেয়া পদক’ প্রদানের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। দিবসটি উপলক্ষে নারী জাগরণের অগ্রদূত ও মানবমুক্তির অগ্নিশিখা মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, নারীদের জীবনমান উন্নয়নে তিনি বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার মাধ্যমেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারীর দুঃখ-দুর্দশা ও সমান অধিকারের দাবি বেগম রোকেয়ার সাহিত্যে জোরালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক’।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বেগম রোকেয়া নারী সমাজকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন ও অধিকার সচেতন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন এবং কর্ম ও ধ্যানে ধারণ করতেন- ‘মেয়ে মানুষ নয়, মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে, তবেই স্বার্থক মানবজনমের।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় এমন উপলব্ধি থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানে নারী-পুরুষের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে নারী শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীকরণ এবং নারী সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন এবং সকল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতির পিতার দর্শনের আলোকে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের নতুন ধারা সূচিত করেন।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এসব পদক্ষেপ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন