নিয়ন্ত্রণ হারানো দ্রুতগামি একটি ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি ঢাকার খিলক্ষেতের বাসের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের চাপা দিলে নারী ও শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে খিলক্ষেত বাজার যাত্রীছাউনির সামনে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-আমিনা বেগম (৩৬), ইয়াসিন (৮) ও উজ্জ্বল পাণ্ডে (২৮)। এদের মধ্যে ইয়াসিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহতদের মধ্যে তিন জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর উজ্জ্বল ও আমিনা বেগম মারা যান। নিহত ইয়াছিনের বাবা মো. সুমনকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক জানান, রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর সড়কে খিলক্ষেত যাত্রীছাউনির সামনে ল্যান্ডক্রুজার মডেলের একটি এসইউভি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৫-২৬৯১) বাসের জন্য অপেক্ষমান লোকজনের ওপর উঠে পড়লে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। যেখানে গাড়িটি গিয়ে আঘাত করেছে সেখানে ছয়-সাত জন দাঁড়িয়ে ছিলেন। গাড়িটি বিমানবন্দরের দিক থেকে বনানীর দিকে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পরই চালক পালিয়ে গেছেন। আর শিশুটির দেহ অনেকক্ষণ গাড়ির তলায় আটকে ছিল। তার শরীর পুরো থেতলে গেছে এবং নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে যাওয়া ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যায়, গাড়িটির সামনে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের স্টিকার লাগানো রয়েছে।
খিলক্ষেত থানার ওসি শেখ আমিনুল বাসার জানান, গাড়ির সামনে সিভিল অ্যাভিয়েশনের স্টিকার লাগানো আছে। তবে এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি। গাড়িটি লোকজনকে চাপা দিয়ে রোড ডিভাইডারে ধাক্কা দিয়ে থেমে যায়। চালককে আটক করা যায়নি।
আহত সুমনের বাবা ও নিহত শিশুটির দাদা মো. মফিজ জানান, তাদের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে। সুমন মোহাম্মদপুরের পাবনা হাউজ গলিতে পরিবার নিয়ে থাকেন। আর তিনি নিজে খিলক্ষেতে একটি বাসায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। সুমন ও তার ছেলে ইয়সিন খিলক্ষেতে তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। মোহাম্মদপুরে ফিরে যাওয়ার পথে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন। ঘটনাস্থলে এসে সুমনকে আহত অবস্থায় পেয়েছেন। কিন্তু ইয়াসিনকে দেখতে পাননি।
নিহত উজ্জল পাণ্ডের শ্যালক সবুজ কির্তনীয়া জানান, বর্তমানে ভাটারা নতুন বাজার এলাকায় থাকতেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী উজ্জ্বল। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর থানার কাজীপাড়া গ্রামে। বাবার নাম মৃণাল পাণ্ডে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, খিলক্ষেত থেকে তিনজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে উজ্জলকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমিনার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন।
মন্তব্য করুন