আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলাকে নতুন বছরে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিকাব) সদস্যদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সব ধরনের সহযোগিতা করছে সরকার। আপাতত নির্বাচনের পর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসবে কিনা তা নিয়ে ভাবছে না সরকার।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য নির্বাচন হচ্ছে না। বিশেষ কোনো দেশ স্বীকৃতি দেবে কি না সেটিও বড় কোনো বিষয় নয়। বর্তমান সরকারই সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই চিন্তিত বা ভীত হওয়ার কিছু নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানান, সরকারকে জানিয়েই ছুটিতে ভারতে যান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
বিদায়ী বছরে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বহুজাতিক ফোরামে ভোটে বাংলাদেশের বিজয়কে বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গত দেড় দশকে উন্নত দেশগুলোর কাছে ঋণগ্রহীতা থেকে তাদের অংশীদার হয়েছে বাংলাদেশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও এ দেশের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
বৈশ্বিক বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যের সম্পর্ক রক্ষায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান ধরে রেখেছে। আমাদের ভূমিকে আমরা কখনও ব্যবহার করতে দেব না। সেটা যদি আমাদের প্রতিবেশী বা অন্য কারও বিরুদ্ধে যায় অথবা অন্য কারও স্বার্থের ব্যাপারও থাকে, তারপরও দেব না। এ ব্যাপারে আমরা ক্লিয়ার।
তিনি আরও বলেন, ভারত ও মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। এ দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সীমান্ত রয়েছে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, উন্নয়ন। আরও কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেই বিষয়টি দেখা। যে কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব, ছায়া যুদ্ধ বা অন্য কিছু আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না। সেজন্য আমরা সবসময় চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে আসছি।
এ প্রসঙ্গে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বন্দ্বে না জড়ানোর বিষয় উল্লেখ করে সচিব বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার যখন রোহিঙ্গাদের পাঠাল তখন নানা রকমের উসকানি ছিল। কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে বলা হয়েছে, কোনো দ্বন্দ্বে না জড়াতে। কোনো কিছুতেই জড়াইনি। কারণ আমরা কোনো দ্বন্দ্ব চাই না।
মন্তব্য করুন