বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ ও অপারেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ ও অপারেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এরপর হাসপাতালের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যন্সেলর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, হাসপাতালটি ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও মেশিনারিজের অভাবে আন্তঃবিভাগ ও অপারেশন কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। করোনার কারণে সাপ্লায়াররা মেশিনারিজ দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য দেশে এমন একটি হাসপাতাল হোক, যেটা বিশ্বমানের। মানুষকে যাতে বিদেশে যেতে না হয়। দেশে এখন অনেক অত্যাধুনিক অপারেশন দেশে হচ্ছে। কিডনি, লিভার, নিউরোলজিসহ নানা জটিল অপারেশন দেশেই সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, লিভার, গল ব্লাডার ও প্যানক্রিয়েটিক, অরগান ট্রান্সপ্লান্ট, ক্যান্সার, হৃদরোগ, নিউরোসার্জারিসহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিশেষায়িত চিকিৎসার ব্যবস্থা বাংলাদেশে চিকিৎসাক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ৭৫০ শয্যার এই হাসপাতাল ৩৬৯ জন নিয়োগ পেয়েছে। আরও ১৮০০ থেকে ২ হাজার লোক লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয় মিলে এই নিয়োগ দিবে।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যন্সেলর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি দেশের একমাত্র সেন্টার বেইজড হাসপাতাল। অর্থাৎ এক ছাতার তলায় সব ধরনের চিকিৎসাসেবা মিলবে। একই সঙ্গে এ হাসপাতালটিই হবে দেশের একমাত্র পেপারলেস হাসপাতাল।
জনসাধারণ এখানে সাশ্রয়ীমূল্যে আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন। আউটডোরে কোনো ডাক্তার ২০ জনের বেশি দেখতে পারবে না। একজন রোগী কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় ধরে দেখতে হবে।
চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। এখানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০০-৪০০০ রোগী সেবা গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে ১৪টি বিভাগে বহির্বিভাগে দুই শিফটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল একটু বিলম্বে চালুর মূল কারণ, যথাসময়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না আসা। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সকল যন্ত্রপাতি চলে আসবে এবং সে অনুসারেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এই হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো ডায়ালাইসিস মেশিন, অ্যানেসথেশিয়া মেশিন, এইচআইএস, আর্থোস্কপিক মেশিনসহ এ জাতীয় অত্যন্ত জরুরি মেডিকেল যন্ত্রপাতি না পাওয়ার কারণেই মূলত এই হাসপাতালটির অন্তঃবিভাগ চালু করতে একটু বিলম্ব হলো।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন