শিশুদের বুক না কেটে অভিনব পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট (এনআইসিভিডি) ও হাসপাতাল এবং চীনের ফুয়াই ইউনান কার্ডিওভাস্কুলার হাসপাতালের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
শনিবার (১৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হৃদরোগ হাসপাতালের অডিটরিয়ামে একটি অনুষ্ঠানে এ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর স্মারক অনুষ্ঠিত হয়।
এনআইসিভিডির পক্ষে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা মীর জামাল উদ্দিন এবং ফুয়াই ইউনান হাসপাতালের পক্ষে হাসপাতালের পক্ষে চীফ কার্ডিয়াক সার্জন ডা. জিয়াংবিং প্যান সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশের শিশু হৃদরোগীদের বুক না কেটে অভিনব পদ্ধতিতে রেডিয়েশন এবং কন্ট্রাস্ট বা ক্ষতিকর ডাই ব্যতিরেকে চিকিৎসা, উচ্চতর গবেষণা, স্বাস্থ্য প্রযুক্তির হস্তান্তর ও বিনিময়, হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকছে।
পরীক্ষামূলকভাবে হাসপাতালের চারজন রোগীকে ডা. প্যান ও তার সহযোগীরা শুধুমাত্র ইকোকার্ডিওগ্রামের মাধ্যমে ডিভাইস সহকারে চিকিৎসা প্রদান করেন। এ ধরনের অভিনব চিকিৎসা বাংলাদেশে সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হলো জাতীয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।
এ ধরনের পদ্ধতিতে চিকিৎসা প্রদানে দরকার দক্ষ জনবল, ইকো মেশিন এবং ডিভাইস বা বেলুন লাগানোর নিরাপদ পরিবেশ। বাংলাদেশের বাস্তবতায় ব্যয়বহুল পদ্ধতিতে দেশের গরিব মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া দুরূহ ব্যাপার। অত্যাধুনিক প্যান পদ্ধতির মাধ্যমে নিরাপদে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দুরূহ এমনকি দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে চিকিৎসার আওতায় আনা সম্ভব হবে। এমনকি গর্ভবতী নারীদেরও নিরাপদভাবে তাদের জন্মগত হৃদরোগের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। হৃদরোগ হাসপাতালে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। শিশুদের হার্টের ছিদ্রসহ বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটিও থাকে। এ ধরনের রোগের জন্য মূলত দুই ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। একটি হলো ওপেন হার্ট সার্জারি, আরেকটি ডিভাইস ক্লোজার (অপারেশনবিহীন)। অপারেশনবিহীন পদ্ধতিটি বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে আগে এক হাজারের বেশি ডিভাইস ক্লোজার সার্জারি হয়েছে। তবে এ পদ্ধতিতে রেডিয়েশনের একটা ঝুঁকি থাকে। রেডিয়েশন শিশু বা গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, চায়না ফুওয়াই হাসপাতাল একটা পদ্ধতিতে এই ডিভাইস ক্লোজার করছে। যেখানে কোনো রকম রেডিয়েশনের প্রয়োজন নেই। চীনের সঙ্গে এই চুক্তির ফলে আমরা রেডিয়েশনবিহীন ইকো মেশিন প্রযুক্তির সহায়তা পাবো। যা শিশু হৃদরোগীদের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে এবং উপকৃত হবে। দেশ ও জাতির জন্য এটা একটা মাইলফলক।
সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা, আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার, অধ্যাপক মোহাম্মদ আতাউল হক, সহযোগী অধ্যাপক ডা নাজমুন উম্মে জাকিয়া।
মন্তব্য করুন