শেখ নবীরুজ্জামান বাবু
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুবলীগ : সংগ্রাম ও সংকটের ৫১ বছর

শেখ নবীরুজ্জামান বাবু। ছবি : লেখক
শেখ নবীরুজ্জামান বাবু। ছবি : লেখক

মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদারদের নৃশংস আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি শোকগ্রস্ত ভূখণ্ড। ৩০ লাখ শহিদের রক্তে স্লাত, দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনের হাহাকার আর স্বজনহারা মানুষের আর্তচিৎকারে প্রকম্পিত বাংলাদেশজুড়ে শুধু পাকিস্তানি হানাদার আর তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংস তাণ্ডবের লোমহর্ষক চিহ্ন প্রকটভাবে দৃশ্যমান। ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ’৭২-এর জানুয়ারি পর্যন্ত পাকিস্তানি কারাগারের দুঃসহ বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেয়ে ’৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত তার প্রিয় মাতৃভূমি যুদ্ধবিধ্বস্ত শ্মশানে পরিণত হওয়া বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেই বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

বাতাসে লাশের গন্ধ সদ্য স্বাধীন দেশ যেন মহাশ্মশান। বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে মাথা তুলে দাঁড় করানোর জন্য তিনি দিন রাত পরিশ্রম করতে থাকেন। জাতির পিতার আজীবনের স্বপ্ন ছিল, প্রিয় বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যে কাজ করতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করেন, বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হলে দক্ষ, যোগ্য, সৎ ও যুবদের কোনো বিকল্প নেই।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘সোনার মানুষ গড়তে হলে আমার সোনার মানুষ চাই।’ যুদ্ধফেরত বিভ্রান্ত যুবসমাজকে সঠিক পথ দেখিয়ে যুবশক্তিতে রূপান্তর ঘটিয়ে স্বদেশ বিনির্মাণের কাজে কীভাবে লাগানো যায়- বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ছিল এটাই। প্রতিবিপ্লব যদি দানা বেঁধে ওঠে, সেটিকে প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। এসব বিষয় মাথায় নিয়ে সোনার মানুষ গড়ার লক্ষ্যেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাগ্নে, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর স্রষ্টা, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মণিকে যুব-তারুণ্যকে সংগঠিত করে একটি যুব সংগঠন গঠনের নির্দেশ দেন। বাংলাদেশের প্রথম যুব সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যুদ্ধ ফেরত তরুণ মুক্তিযোদ্ধা ও সদ্য স্বাধীন দেশের আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন ও প্রত্যাশায় দেশি-বিদেশি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে সোনার মানুষ গড়ার ব্রতে বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ নিয়ে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর শহীদ-সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মণি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণি মনেপ্রাণেই চেয়েছিলেন স্বাধীনতা-পরবর্তী অস্থির যুবসমাজকে সৃজনশীল ধারায় প্রবাহিত করতে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা তথা জাতীয় চার মূলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র্যবিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে যুবলীগের মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তোলাই ছিল তার লক্ষ্য।

একাত্তর পূর্ববর্তী আন্দোলন সংগ্রামে শেখ ফজলুল হক মণি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রধানতম সিপাহসালার। আমরা যদি ষাটের দশকের বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, বঙ্গবন্ধু যেমন তার রাজনৈতিক সঙ্গীদের নিয়ে স্বাধীকার আন্দোলনের জন্য লড়ে যাচ্ছেন তেমনি তার ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি মূল দল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে নিয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে ব্যস্ত রেখে চলেছেন। সংগঠিত করছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে, যারা পরবর্তী সময়ে নেতৃত্ব দিবেন তাদের। বিশ্ব ইতিহাসে ষাটের দশক এক অন্য মাত্রায় লক্ষ্য করা যায়, আমরা শেখ মণিকেও দেখতে পাই যে তিনি তার মামা শেখ মুজিব, যার সঙ্গে তার শৈশব-কৈশোরকালও কেটেছে কলকাতায়, তার সঙ্গে একটি প্রবলতর স্বাধীকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট রচনা করে চলেছেন। একদিকে সামরিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধাচার, অপরদিকে একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে আমরা শেখ মণিকে কখনই নিভৃতে দেখি না, দেখি একেবারে ফ্রন্টে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশাপাশি। এমনকি মৃত্যুতেও এ সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি করেনি, ঘাতকের হাতে দুজনের মৃত্যুও একই সময়ে। ইতিহাসে রক্তের ও রাজনৈতিক যুগপৎ সম্পর্কের এ রকম নজির খুব একটা পাওয়া যায় না।

স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বের বলিষ্ঠতায় আমরা যে কজন নেতার নাম জানতে পারি তন্মধ্যে শেখ মণি নামটির উজ্জ্বলতা অন্যদের ছাপিয়ে যায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কেবল বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে বলেই শেখ মণির নেতৃত্বে একটি গেরিলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং বাংলাদেশের ভেতর যুদ্ধ করতে পাঠিয়েছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। বরং শেখ মণির সমসাময়িক অন্য কোনো নেতা নয়, কেবল তাকেই বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে জেনারেল উবান কিংবা অন্যান্য ভারতীয় ইতিহাস রচয়িতাদের রচনা থেকে আমরা জানতে পারি, শেখ মণির সংগঠন-দক্ষতা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অবিচল লক্ষ্যই মূল কারণ। এমনকি কোনো কারণে যদি পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু জীবিত ফিরে আসতে না পারেন (যার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল) তাহলে শেখ মণি-ই যে তার বিকল্প হিসেবে এ দেশের জনগণকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন সেটাও আমরা জেনেছি তাদের বক্তব্য থেকে।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে শুধু চ্যালেঞ্জ জানানো নয়, একটি প্রতিবিপ্লবী ও সন্ত্রাসী রাজনৈতিক ধারা সূচনা করেছিল একটি চক্র। ১৯৭৫ সালের ভয়ংকর বিয়োগান্তক পরিস্থিতির যারা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কুশীলব, তারা বঙ্গবন্ধুর পরেই যে রাজনৈতিক নেতার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল; তিনি আসলে শেখ মণি। জাতীয় চার নেতা তো অবশ্যই ‘হিট লিস্টে’ ছিলেন; কিন্তু শেখ মণিকে তারা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই শেষ করে দিতে চেয়েছিল।

এতটা ঘৃণা পোষণের কারণ কেবল তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে সেজন্য নয়, বরং আমরা দেখতে পাই, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ মণি যুবলীগ গঠন করে আওয়ামী লীগের তরুণ নেতৃত্ব সঞ্চারের ‘কারখানা’ খুলেছেন এবং তিনি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন বহুমুখী ভূমিকা নিয়ে। কখনো তিনি জাতীয় দৈনিকের জনপ্রিয় সংবাদপত্রের সম্পাদক, কখনো তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক, কখনো তিনি গল্প লেখক, কখনো তিনি দেশের চলচ্চিত্র বিকাশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন ব্যক্তি। রাজনীতিতে তার বিচক্ষণতা আমরা পাকিস্তান আমলেই লক্ষ্য করেছি; কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি নিজেকে তুলে আনতে পেরেছিলেন নতুনতর ভূমিকায়, যা তার সতীর্থ রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সহ্য হওয়ার কথা নয়। শুধু যুবলীগ নয়, শেখ মণি বাংলাদেশের কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিক কেন্দ্রিক যে রাজনীতি সেখানেও নিজের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছিলেন।

বলা বাহুল্য, বঙ্গবন্ধু ও তার রাজনীতির বিরোধিতা করলে শেখ মণিকেও তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হয়। সুতরাং বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার শত্রুরা হয়ে যায় শেখ মণির শত্রু। পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের এ দেশীয় দোসরদের চোখে তখন শেখ মণি এক আতঙ্কের নাম। আমরা দেখি সে সময় শেখ মণি তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাহাস করছেন (সাপ্তাহিক হলিডে সম্পাদক ও পরবর্তী সময়ে জেনারেল জিয়ার ঘনিষ্ঠ এনায়েতুল্লাহ্ খান মিন্টুর সঙ্গে শেখ মণির বাহাস পত্রিকার পাতাতেই পাওয়া যায়), এমনকি তার বিরুদ্ধে সে সময়কার কোনো সাংবাদিক / সম্পাদকের অভিযোগ কিংবা বঙ্গবন্ধুর কাছে গিয়ে নালিশ করার জবাব শেখ মণি আসলে তার পত্রিকার সম্পাদকীয় কিংবা অন্যান্য লেখাতে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভেতরও তার শত্রু ছিল, পঁচাত্তর পরবর্তীকালে তাদের চেহারাও উন্মুক্ত হয়েছে। এদের সম্মিলিত অপতৎপরতা ও ভয়ংকর শত্রুতার যবনিকা ঘটেছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে। শেখ মণি নিজের জীবন দিয়ে দেশের প্রতি ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার দায় শোধ করেছেন। খুনিদের প্রতিশোধ আকাঙ্ক্ষা কতটা নিচু স্তরের ছিল যে তারা শেখ মণির স্ত্রী শেখ আরজু মণিকেও সে রাতে খুন করে। শিশুঘাতী, নারীঘাতী এই হন্তারকরা পরবর্তী দুই দশক ধরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ মণির পরিবার পরিজনদের এ দেশে চরম নিষ্ঠুর নিপীড়নের মধ্যে জীবনযাপনে বাধ্য করেছে। পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে প্রথম সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসন-সময়টাতে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ রকম ঘৃণার শিকার খুব কম পরিবার ও ব্যক্তিত্বের ভাগ্যে হয়েছে, অথচ বাংলাদেশে আজকে যে বিশাল রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিপক্ষে রাজনীতি করছে, তাদের জন্ম ও বিস্তার লাভ দুটোই হয়েছে এই ঘৃণা, হত্যাকাণ্ড, রক্তপাত ও মিথ্যাচারের ওপর ভিত্তি করে, এটিও আসলে পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

শেখ ফজলুল হক মণির ৩৫ বছরের ক্ষণজন্মা জীবনে ৫ বছর কেটেছে কারাগারে। ’৭১-পূর্ববর্তী যুব সংগঠন না থাকলেও ষাটের দশকের সব আন্দোলনে যুবকদের সঙ্গে নিয়ে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১৯৬২ সালে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিএলএফ গঠন করেন। বিএলএফের কার্যক্রম ছিল গোপনে। ১৯৬৬ সালে জাতির পিতার ৬ দফা বাস্তবায়ন আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয় এবং পুনরায় কারারুদ্ধ হন। আইয়ুব খান সরকারের নির্যাতনে পিষ্ট হয়ে কারাভোগ শেষে ১৯৬৯ সালে মুক্তি পেয়ে তিনি আবার গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণা প্রদান করলে ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হলে এবং নিরীহ বাঙালিদের মুক্তি সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধকে সফল করতে শেখ ফজলুল হক মণি ১৯৭১ সালে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠন করেন। তিনি মুজিব বাহিনীর সদস্যদের চারটি সেক্টরে ভাগ করে ১৯ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমান্ড গঠন করেন। এই বাহিনীকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল উবানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দেরাদুন এলাকায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনী গেরিলা রণকৌশল বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ছিল এবং তুলনামূলকভাবে উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল। তখন তিনি মুজিব বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।

দেশ স্বাধীনের পর আন্তর্জাতিক চক্রান্তে প্রতিবিপ্লবী চক্র মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে জাসদ গঠন করে। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের অলীক স্বপ্নে বিভ্রান্ত হয়ে অনেকে জাসদে যোগদান করে। স্বাধীনতা বিরোধীচক্রও নিজেদের পিঠ বাঁচাতে জাসদে যোগদান করে। সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে জাসদের সশস্ত্র গণবাহিনী ও সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টির যুগপৎ খুন, ধর্ষণ, ডাকাতিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সারা দেশে ভয়াবহ আতঙ্ক আর অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বলা বাহুল্য, এই ভয়াবহ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সংকটকালের মধ্যে যুবলীগের জন্ম। সেই সংকটময় মুহূর্তে যুবলীগ একদিকে জাসদ-সর্বহারা পার্টির সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেছে, অন্যদিকে দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছে। সেই সময়ে বাংলাদেশের বহুমুখী সমস্যাকে মোকাবিলা করার জন্য শেখ মণি যুবলীগকে প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং যুবলীগকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। যুবকদের তিনি প্রগাঢ় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। ’৭৩, ’৭৪ সালের বন্যা ও বিশ্ব পরাশক্তি সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি শেখ মণির নেতৃত্বে যুবলীগ কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী ও সম্মোহনী নেতৃত্বে ’৭৫ সালের দিকে বাংলাদেশ যুদ্ধ, ক্ষরা, বন্যা, দুর্ভিক্ষের ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হতে থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হতে থাকে। আর এই অবস্থায় আসতে বঙ্গবন্ধুকে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করে শেখ মণির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

’৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে জিয়া-মোশতাকের পাঠানো ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পূর্বেই শেখ মণিকে হত্যা করেছিল। শেখ মণিকে আগে হত্যা না করলে তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারবে না; এই ভয় তাদের ছিল। আবার তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সফল হয়ও; কিন্তু শেখ মণি জীবিত থাকে, তাহলে শেখ মণি দেশের যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ শেখ ফজলুল হক মণি একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা কর্তৃক হত্যা করে খুনিরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছিল- পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ‘অপরাধে’ তারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কতটা ভয়ংকর ও নিষ্ঠুর হতে পারে। তবে কেবল ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড নয়, খুনিচক্রের হাতে প্রাণ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধেও সময় বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্ব প্রদানকারী জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান। শুধু তাই নয়, অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী মোশতাক-জিয়াচক্র বঙ্গবন্ধুর অনুসারী শতশত নেতাকর্মীকে কারাগারে নিক্ষেপ করে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হন। যুবলীগই প্রথম বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়া-মোশতাক চক্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করেছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার যুবলীগ নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ আন্দোলনে যুবলীগ নেতা চট্টগ্রামের মৌলভি সৈয়দ এবং বগুড়ার খসরু আত্মাহুতি দেন এবং অসংখ্য নেতাকর্মী জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেন। ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হন যুবলীগ নেতা বিশ্বজিৎ। ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন পর্যন্ত শোক মিছিলেে যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, তা বাস্তবায়নে তারা নিজেরা যেমন সক্রিয় হয়েছিলেন, তেমনি সংগঠনের কর্মীদেরও যুক্ত করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ভূমিকা পরবর্তী সময়েও দেখা গেছে। ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান ফিরিয়ে আনার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা অসীম সাহসে রাজপথে নামে। জিয়া ও সাত্তার সরকারের বিরুদ্ধে তারা নিরস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে গেছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এসব আন্দোলন সংগ্রামে যুবলীগের অজস্র নেতাকর্মী জেল, জুলুম, হুলিয়া, নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ফেব্রেুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে সামরিক শাসনকে চ্যালেঞ্জ করেন। এ জন্য ১৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ের ভয়ানক সব আঘাতে ক্ষতবিক্ষত –বিপর্যস্ত বঙ্গবন্ধুর দলকে পুনর্গঠিত করার কঠিন কাজটি তাকে সম্পন্ন করতে হয়। এ সময় তার পাশে থাকে যুবলীগ নেতাকর্মীরা। তারা রাজনৈতিক সংগ্রাম পরিচালনা করে, যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এ কাজ সহজ ছিল না। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে কেবল ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান নিষিদ্ধ করার অপচেষ্টা হয়নি, আওযামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাও ব্যর্থ করে দিতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হয়েছে। মিছিল-সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার চেষ্টা চলেছে। কিন্তু তিনি ছিলেন অদম্য। রাজপথ কখনো ছাড়েননি। আশির দশকে এ সময় তার পাশে থেকেছে যুবলীগ। ১৯৮২ সালের মার্চ থেকে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর, এই ৯ বছর সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় রেখেছিল যুবলীগ। তারা স্বৈরাচারবিরোধী হরতাল সফল করতে পিকেটিং করেছে, সমাবেশে অংশ নিয়েছে এবং একই সঙ্গে প্রতিপক্ষের হামলা-সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছে।

এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে নূর হোসেন, বাবুল, ফাত্তাহসহ অসংখ্য যুবলীগ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আত্মাহুতি দিয়েছে। বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথে বাংলাদেশের এগিয়ে চলার পথে বাধার প্রাচীর গড়ে তুলছে যারা, তারা জানে শেখ হাসিনাকে দুর্বল করতে হলে যুবলীগকে দুর্বল ও হতাশ করতে হবে। তাই এই সংগঠনের নেতাকর্মীরাই তাদের টার্গেট। গত ৫১ বছরের পথচলায় এই যুবলীগ এবং এই সংগঠনের নেতারা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায় এবং স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। পঁচাত্তর পরবর্তী ও নব্বইয়ের সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ এসব গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে যুবলীগের অনেক নেতাকর্মী অকাতরে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। বাংলার অবিসংবাদিত নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসন বিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলনে যুবলীগের বহু নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন। বিশেষ করে যুবলীগের গর্বিত কর্মী নূর হোসেন ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক- গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ এ স্লোগানটি বুকে ও পিঠে অঙ্কিত করে গণতন্ত্রমনা ও মুক্তিকামী মানুষের চিরন্তন আকাঙ্ক্ষার এক জীবন্ত পোস্টার হয়ে আছেন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরশাসকের নির্মম বুলেটে জীবন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এক নবতর দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন যা অনন্তকাল প্রেরণার উৎস হয়ে হয়ে থাকবে। নানা মানবিক কার্যক্রমেও সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল অংশগ্রহণ ছিল।

’৯১ থেকে ’৯৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে যুবলীগ। ’৯৬-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ হন যুবলীগ নেতা বদু। ২০০১ থেকে ২০০৬, এই পাঁচ বছরে জামায়াত-বিএনপি সরকারের সন্ত্রাসীরা ২০ সহস্রাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করে। খালেদা-নিজামী সরকারের সেই ভয়াবহ লোমহর্ষক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে প্রথম প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, নির্বাচন কমিশন ঘেরাও, হাওয়া ভবন ঘেরাও, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আন্দোলন, লগি-বৈঠা মিছিল করে যুবলীগ খালেদা-নিজামী সরকারের ভিতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সকালে যুবলীগ ও যুবজোটের পূর্বঘোষিত মুক্তাঙ্গনের অবস্থান কর্মসূচির ওপর জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে আক্রমণ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনব্যাপী চলা এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে যুবজোটের চারজন নেতাকর্মী শহীদ হন।

যুবজনতার প্রবল প্রতিরোধের মুখে একপর্যায়ে জামায়াত-বিএনপি সন্ত্রাসীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ১/১১-তে নেত্রীর মুক্তির দাবিতে এবং নেত্রীকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুবলীগ সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। যুবলীগ ঘোষণা করে, ‘নো শেখ হাসিনা, নো ইলেকশন।’ যুব-জনতার আন্দোলনের মুখে ১১ মাস পরে সরকার ২০০৮ সালের ১১ জুন নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর এবং ’৭১-এর স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক দালালদের বিচার করার জন্য আইনি তৎপরতা শুরু করলে বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। হরতাল অবরোধের নামে তারা চলন্ত গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা করে। রাতের অন্ধকারে তারা দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ঘুমন্ত ড্রাইভার হেলপারদের হত্যা করে। জামায়াত-বিএনপির এই অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুবলীগ সারা দেশে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে। ২০১৪ সালের ৫ মে হেফাজত ইসলাম ও জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা গুলিস্তানস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালালে যুবলীগ নেতাকর্মীরা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের পিছু হটতে বাধ্য করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিহত করতে বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে যে নজিরবিহীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় যুবলীগ তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে। একই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও করেছে। সেই সব আন্দোলনেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে যুবলীগ।

সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও সংকট পার হয়ে ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়াদী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যুবলীগের ইমেজ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে শেখ ফজলুল হক মণির জেষ্ঠ সন্তান শেখ ফজলে শামস্ পরশকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে পরশ-নিখিল কমিটি। শত সংগ্রাম ও সংকট পেরিয়ে যুবলীগ আজ মানবিক যুবলীগ। ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানাই।

লেখক : শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক উপসম্পাদক, বাংলাদশে আওয়ামী যুবলীগ এবং সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদশে ছাত্রলীগ

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে কাঁচামাল

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

সড়কের মাঝখানে গাছ রেখেই ঢালাই সম্পন্ন 

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

১০

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

১১

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

১২

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

১৩

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

১৪

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

১৫

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

১৬

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

১৭

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

১৮

তারের পর এবার চুরি হলো সেতুর রিফ্লেক্টর লাইট

১৯

‘এবার আমাদের পালা’ স্বরূপ আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে : টিআইবি

২০
X