বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলায় সাজা দেওয়া হলো তাকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ ও মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, সরকারের আজ্ঞাবহ আদালত কর্তৃক ঘোষিত এই ফরমায়েশি রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং সরকারকে এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। নতুবা বাংলাদেশের চিকিৎসক সমাজ ও সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে ড্যাব রাজপথে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করবে। তারা বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সুদূর পরাহত। আজ বাংলাদেশে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে বিগত ১৪ বছরে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোকে খর্ব করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, নির্বাচন কমিশন ও দুদককে দলীয়করণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বস্তরে দলীয় লোকজনের নিয়োগ এমনকি শেষ ভরসাস্থল বিচার বিভাগকেও দলীয়করণের মাধ্যমে একটি প্রতিবাদহীন একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েমের নীল নকশা বাস্তবায়ন করেছে এই সরকার।’
ড্যাব নেতৃদ্বয় বলেন, ‘দুদক এখন সরকারের অন্যতম আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিপূর্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় কারান্তরীণ। আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্তির অধিকার থাকলেও তাকে সেই অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। গত ১৪ বছরে গায়েবি মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় লাখ লাখ বিরোধীমতের লোকদের আসামি করা হয়েছে। হাজার হাজার লোককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।’
তারা বলেন, ‘বর্তমান এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষকে উদ্ধারে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি তারেক রহমান। তার আহ্বানে দেশের দলমত নির্বিশেষে সব মানুষ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হঠানোর এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। ঠিক এমন সময়ে অত্যন্ত দ্রুত নজিরবিহীন গতিতে তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আয়কর মামলায় সাজা দেওয়া হলো। যে মামলা চলার মতো কোনো আইনগত উপাদান নেই। কেননা তারেক রহমান ২০০৭ সালের সম্পদবিবরণীতে বর্ণিত সম্পদের বিপরীতে আয়কর পুরোপুরি জমা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ৩৫ লাখ টাকা এফডিআর ও এফডিআরের মামলা দায়েরের পূর্বেই (২০০৫-০৬) অর্থবছরের ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া হয়েছিল।’
ড্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, ‘কিন্তু দুদক এই মর্মে মামলা করে যে, এই এফডিআরের টাকা তারেক রহমানের কাছ থেকে ডা. জুবাইদা রহমান নিয়ে এফডিআর করেছেন আর তাতে সহযোগিতা করেছেন তার মাতা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। এটা অত্যন্ত হাস্যকর ব্যাপার। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সম্পদের তথ্য যদি হিসাব বিবরণীতে ভুলক্রমে না দেখানো হয়, তাহলে সেটা আয়কর আইনের আওতায় আসবে, কোনোভাবেই দুদকের আইনের আওতায় না। দুদক এই মামলার মাধ্যমে পক্ষপাতিত্বমূলক অতি উৎসাহী আচরণের প্রমাণ দিয়েছে।’
তারা আরও বলেন, ‘ডা. জুবাইদা রহমান পেশায় একজন স্বনামধন্য কার্ডিওলজিস্ট। তার পিতা রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান এবং সাবেক মন্ত্রী ছিলেন। তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এহেন সাজা প্রদান প্রমাণ করে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত এবং জিয়া পরিবারের প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণ। বাংলাদেশে একদলীয় শাসন কায়েমের পথে জিয়া পরিবার এক বিরাট বাধা। সে কারণেই প্রথমে খালেদা জিয়া, শহীদ জিয়াউর রহমান, পরবর্তীতে তারেক রহমান এবং সর্বশেষে ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলা এবং শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপকৌশল করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন