কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ০৪:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
১২ দলীয় জোটের কালো পতাকা গণমিছিল

আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন

রাজধানীতে ১২ দলীয় জোটের কালো পতাকা মিছিল। ছবি : কালবেলা
রাজধানীতে ১২ দলীয় জোটের কালো পতাকা মিছিল। ছবি : কালবেলা

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তারা ক্ষমতাসীন সরকারকে অবিলম্বে জনগণের এক দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় দেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

আজ শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীতে কালো পতাকা গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা আরও বলেন, পতন নিশ্চিত জেনে সরকার ও সরকারি দল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মরণ আঘাত হানছে বিরোধী দলের উপর! পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসমূহের সতর্কতা উপেক্ষা করে সারাদেশে নির্বিচারে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। দিন ফুরিয়ে এসেছে, ভারত তাদের রক্ষা করতে পারবে না, এটা তারা মানতে পারছে না! জেল-জুলুম নির্যাতন করে জনগণকে দমিয়ে রাখার দিন শেষ।ক্ষমতা ধরে রাখার স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন মাত্র !

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, সাজানো ও পাতানো মামলার আসামি বানানোর নিন্দা ও প্রতিবাদসহ শেখ হাসিনার ফ্যসিস্ট সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ১২ দলীয় জোটের নেতৃত্বে বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি সংলগ্ন সড়ক থেকে এক কালো পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে মিছিলে অংশগ্রহণ করে নেতৃত্ব দান করেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সাধারণ সম্পাদক মানসুর আলম সিকদার, মহাসচিব ও সমাবেশ উপস্থাপনা করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম।

মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যার প্রমাণ ব্রিকস সম্মেলন। অথচ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্য পদ নিশ্চিত। কিন্তু কোনো স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার বিশ্বে মর্যাদা পায় না। আমরা দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন, পুরো বিশ্ব যেমন সংকটে পড়ছে তেমনি বাংলাদেশ নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত। সুতরাং আমি বলবো সরকার বাহাদুর আপনারা অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। আজকে দেশে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান আপনারা আপনাদের আন্দোলন জোরদার করুন।

অন্য বক্তারা বলেন, প্রশাসন ও সরকারি দলের লোকেরা বুঝে গেছে তাদের সময় শেষ। তাদের মধ্যে পরাজয় ভীতি এবং অপকর্মের প্রতিফল পাওয়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের মনে সাহস যোগাতে এবং পরাজয় ভীতি দূর করে মনকে চাঙ্গা রাখতে সঞ্জিবনী শক্তি হিসেবে ভারতের সমর্থন পাওয়ার বিষয়টি ঢাকডোল পিটিয়ে প্রচার শুরু করেছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশী বদলানো যায় না। তাই আমরা ভারতের জনগণকে আমাদের বন্ধু মনে করি। পাশাপাশি এটাও চাই ভারতের সরকার বিশেষ একটি দল নয় বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতি অনুধাবন করার চেষ্টা করবে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেবে না।

তারা বলেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সরকারি দলের লোকেরা ভারতের সমর্থন পাওয়ার উষ্ণতা অনুভব করার চেষ্টা করছে। দলের নেতাকর্মী ও প্রশাসনের বিষণ্ন মানসিকতা চাঙ্গা করতে ভারতের আশীর্বাদকে উল্লেখ করে মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় লাজলজ্জার মাথা খেয়ে বলেছিলেন, আমি ভারতকে বলে এসেছি শেখ হাসিনা সরকারকে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসতে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা লাভের উদ্দেশ্য কি এটাই ছিল যে পিন্ডির গোলামীর জিঞ্জির ভেঙে দিল্লির গোলাম হবো!

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অনেকগুলি বিষয় প্রমাণ করছে,সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বর্তমানে আমেরিকায় পিএইচডি গবেষক সাবেক বুয়েটের ছাত্র তানজিলুর রহমান ২০ আগস্ট একটি পোস্ট দিয়ে সরকারের সমালোচনা করায় খুলনার খালিশপুরে তার মা আনিশা সিদ্দিকাকে গ্রেফতার করেছে। অ্যামনেস্টির ইন্টারন্যাশনাল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তানজিলুরের মায়ের মুক্তি দাবি করেছে। অ্যামনেস্টি আরো বলেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একের পর এক গ্রেফতার দেশে একধরনের অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করছে।

নেতৃবৃন্দ সরকারকে আর জল ঘোলা না করে জনগণের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে চিন্তা করুন। চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে রাজি আছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খুলনায় প্রেস সচিব শফিকুল আলম অবরুদ্ধ

নিউইয়র্কে মোমেনা চৌধুরীর ‘গোধূলিবেলায়’

ক্ষমা চাইলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী

রোববার পরীক্ষায় অংশ নেবে সেই আনিসা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭৬ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন

জাতীয় তায়কোয়নদোতে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা গ্রুপ

একাধিক প্রেমই তাদের নেশা, ফাঁদে ফেলে করেন বিয়ে-প্রতারণা

‘নেইমার উত্তর দেবে তো?’ রাফিনিয়াকে মজার প্রশ্ন ইয়ামালের

রাতের আঁধারে বনে ঘোড়া জবাই, মাংস প্রস্তুতকারী আটক

খেলতে গিয়ে বিলের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

১০

ড. ইউনূসের জন্মদিনে কেক ও ফুল পাঠালেন তারেক রহমান

১১

নাগরিকত্ব নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পর্তুগাল

১২

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত : হারেৎজ

১৩

ভ্রমণকারীদের ডাকছে কিমের নতুন পর্যটন শহর

১৪

মৃত্যুর আগে যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শেফালি

১৫

শান্তর নেতৃত্বে কেমন ছিল বাংলাদেশের পারফরম্যান্স

১৬

কাস্টমসের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস প্রায় বন্ধ

১৭

শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়া নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি

১৮

সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বললেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা

১৯

মালয়েশিয়ায় মসজিদের কাছে পড়ে থাকা ব্যাগ খুলে তাজ্জব মুসল্লি

২০
X