বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে সরকারি পাট ও চিনিকলগুলো বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিককে পথে বসানো হয়েছে। তারা স্ত্রী-সন্তানসহ অর্ধহারে-অনাহানে দিনাতিপাত করছে। বই-খাতা ক্রয় করতে না পেরে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, প্রচলিত নিয়মে ৫ বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি ও জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা হয়ে থাকলেও বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময়ে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ন্যূনতম মজুরি ও জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করা হয়নি। অথচ চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় শ্রমিক সমাবেশ সামনে রেখে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে আজকে সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, বাজারমূল্যের সাথে অসংগতি, কম মজুরিতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর। অগণতান্ত্রিক শ্রম আইনে মালিকপক্ষের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় শ্রমিক সমাজ সর্বত্র হয়রানিসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল-২০২৩ এর মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবি উত্থাপনের অধিকারকে আইন করে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সারা দেশের শ্রমিকদের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, শ্রমজীবী মানুষের আয় দিন দিন কমে যাচ্ছে। গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে। এখনো প্রতিদিন শ্রমিক ছাঁটাই চলছে, বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। শ্রমিকের জীবনে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ জামান মামুন মোল্লা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন