আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত সমাবেশে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিকেলে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে পুরো এলাকা মুখরিত রাখে। সকাল থেকে ঢাকা ও পাশের জেলাগুলোর শিল্প-কারখানার শ্রমিকরা আসতে শুরু করেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর জেলার অসংখ্য নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
বিএনপির ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি শ্রমিক দলসহ অঙ্গসংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. আবু আল ইউসুফ টিপুর নেতৃত্বে ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের উদ্যোগে দুপুরে নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশে বিশাল মিছিল নিয়ে কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত হন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির তত্ত্বাবধায়নে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এস এ আসলাম ও সদস্য সচিব ফারুক হোসেন।
প্রসঙ্গত, ‘মে দিবস দিচ্ছে ডাক, বৈষ্যম নিপাত যাক’ এই শ্লোগানের মধ্য দিয়ে নয়াপল্টনে শুরু হয় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের শ্রমিক সমাবেশ। দুপুর ২টা ১০ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশের কার্যক্রম। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের লম্বা সড়ক সেই ফকিরাপুল থেকে শুরু করে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত হাজারো শ্রমিকের উপস্থিতি সমাবেশটি রুপ নেয় জনসমুদ্রে।
সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
সমাবেশে মাথায় লাল টুপি, গায়ে লাল গেঞ্জি পড়ে আসা শ্রমিকদের কন্ঠের অন্যতম শ্লোগান ছিল- ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও, লড়াই করো’। আন্তর্জাতিক শ্রমিকদের এই সার্বজনীন শ্লোগানের পাশাপাশি ‘অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন চাই, নির্বাচন দিতে হবে দিতে হবে’ এই স্লোগানও উচ্চারিত হয়েছে সর্বক্ষণ।
শ্রমিক দলের ১২ দফা দাবিসমূহ হচ্ছে- অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিচার, সব প্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার, বন্ধ শিল্প চালু, নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠা, আউট সোর্সিং বন্ধ করে স্থায়ী পদ সৃষ্টি, অবাধ, গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রমিক হত্যার বিচার, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করা, জাতীয় নুন্যতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা, বৈষ্যমহীন জাতীয় পে-স্কেল ও মজুরি হার ঘোষণা, জরুরি পরিসেবা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল এবং খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই নির্মাণ করা হয় বিশাল মঞ্চ। মঞ্চে লাল রঙের বিশাল ব্যানারে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। আর লেখা আছে, ‘মে দিবস দিচ্ছে ডাক, বৈষ্যম নিপাত যাক’।
মন্তব্য করুন