গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা নতুন করে দেশের হাটবাজার, সড়ক-পরিবহনে চাঁদাবাজি করছে। এসব চাঁদাবাজ, দখলদার, দুর্বৃত্তদের এখনই সবাই মিলে রুখে দাঁড়াতে হবে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ এভাবে চলতে পারে না। আপনারা চাঁদাবাজদের কোনো সুযোগ দেবেন না।
শনিবার (১৭ মে) বিকেলে রাজধানীর রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্নীতি-লুটপাট, গুম-খুন ও দুঃশাসনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রতিবাদ, জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের বিচার এবং জুলাই জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ কদমতলী থানা শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা। জটিল রোগে সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কিংবা বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটতে হয়। ঢাকা মেডিকেলে মানুষ মানবেতর পরিবেশে চিকিৎসা নেয়, সিট পায় না। অথচ সরকার ১০ বিভাগে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ১০টা আধুনিক হাসপাতাল করলে দেশের মানুষ মানসম্মত চিকিৎসা পেত।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতা, ব্যবসায়ী-আমলারা চিকিৎসা নিতে বিদেশ যায় আর দেশের মানুষ ধুঁকে ধুঁকে বিনা চিকিৎসায়, অপচিকিৎসায় মরে। জেলা পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই, নেই মানসম্মত শিক্ষক। এসব বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে।
ভিপি নুর বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র কৌশলগত বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। করিডোরের নামে বিদেশি ঘাঁটি বানাতে খাল কেটে কুমির আনা হচ্ছে। আমরা সরকারকে করিডোর প্রদান ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে একটি বিশেষ দলের লোকদের মেয়র-কাউন্সিলর পদে বসানোর পাঁয়তারা চলছে। আমরা এসব মেনে নেব না।
দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সংস্কারের নামে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিলে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের পরিণতি ভোগ করা লাগবে। গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ ছাড়া অন্য কাজে বেশি মনোযোগ দিলে ভুল করবেন। ইতোমধ্যে সরকারের ওপর জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এটাকে আর না বাড়ানোর অনুরোধ করছি। ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্য ভেঙে ফেলেছেন, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করে সংকট আর ঘনীভূত করবেন না। আমরা চাই, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ের মতো সবার মাঝে ঐক্য থাকুক।
দলটির মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, ৭১ সালের চেতনা বিক্রি করে আওয়ামী লীগ খেয়েছে আর এখন নব্য বিপ্লবীরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনা বিক্রি শুরু করেছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, জুলাই বিপ্লব কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। জুলাই বিপ্লবকে যারাই বিতর্কিত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
কদমতলী থানা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক বশির গাজীর সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের, মাহফুজুর রহমান খান, সহসভাপতি সৈয়দ ইব্রাহিম রনক, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুবনেতা জাহাঙ্গীর হিরণ, ছাত্রনেতা অর্নব হোসাইন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন