আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে আপত্তি শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনায় এনসিপি নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। রুমিনের সেই বক্তব্যে ‘কড়া’ জবাব দিয়েছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
রোববার (২৪ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে এনসিপি নেতা আতাউল্লাহসহ নেতাকর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসনাত।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “বিএনপির একজন নেত্রী (রুমিন ফারহানা) বলছেন, ‘আমরা চাইলে এখানে গুণ্ডা নিয়ে আসতে পারতাম। অর্থাৎ গুণ্ডার পৃষ্ঠপোষকতা ওনারা দিয়ে আসছেন। আমরা দেখছি, নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। যারা এই গুণ্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন, তারা কীভাবে ভোটকেন্দ্র দখল করবে সেটির আজকে হচ্ছে টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেছে।”
এর আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে আপত্তি শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
রোববার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন, তিনি পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষের স্বীকারোক্তি নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে আমরা প্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করেছি। জনসংখ্যা বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত। আমার বিষয়গুলো আমি নিজে প্রেজেন্ট করব, তাই করেছি। আশা করেছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন তিনি গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে ঢুকবেন না। কিন্তু তারা গুন্ডা নিয়ে ইসিতে এসেছেন। এই আসনের প্রার্থী তার গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে এসে মারামারি করেছেন- এটা খুবই লজ্জাজনক। এতে কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
এনসিপি কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি যেহেতু পরিচিত মুখ নন, সুতরাং উনি জামায়াত না এনসিপি আমার জানা নেই। তবে ওনার লোকজন প্রথমে আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আমার লোকজন তো বসে থাকবে না, কারণ আমি একজন নারী। আমার লোকজনকে মারধর করেছে, তখন আমার লোকজন জবাব দিয়েছে।’
এসময় এনসিপির তিনজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে দলটি। তারা হলেন, এনসিপি নেতা প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী, মুস্তফা সুমন ও আতাউল্লাহ।
এদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও অন্য নির্বাচন কমিশনারের সামনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
দুপুর ১২টার দিকে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে সিইসির সভাপতিত্বে শুরু হওয়া শুনানিতে অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব অংশ নেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া প্রকাশের পর পক্ষে ও বিপক্ষে আবেদন জমা পড়ে। আজকের শুনানির একপর্যায়ে ২ পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং মারামারিতে জড়ায়।
পরে ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর ইসি সচিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানির সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং তাদের শুনানি কক্ষ ত্যাগের অনুরোধ জানান।
শুনানিতে অংশ নেন রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে তার যুক্তি তুলে ধরেন। ওই এলাকার বেশ কয়েকজন খসড়ার বিপক্ষে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। একপর্যায়ে ২ পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
মন্তব্য করুন