গণহত্যার বিচার, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধকরণ, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে জুলাই জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে জুলাই মঞ্চের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত জুলাই জনতার সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে যোগ দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল তার খুব সামান্যই পূরণ করতে পেরেছে এই সরকার। বিপ্লবীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে তারা নিজেরাও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিচার না হওয়াটা একটা অশনি সংকেত। এই বর্বরোচিত হামলার বিচার করা সম্ভব না হলে জুলাইয়ের অন্যান্য শরিকদেরও ভবিষ্যতে এমন হামলা ও জুলুমের মুখোমুখি হতে হবে। তাই সব দল ও মতকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিপ্লবীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রুখে দিতে হবে। এজন্য ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে সুসংহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও বিচারের বিষয়ে গাফলতি করেছে। বিচারের নামে তারা টালবাহানা শুরু করেছে। জুলাই শহীদদের ব্যাপারে উদাসীনতা ও জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না পারার ব্যর্থতার দায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জুলাই মঞ্চের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বিপ্লবের পর যে ইনটেরিম সরকার করা হয়েছে, এটি বিপ্লবের ওপর একটা বিগেস্ট স্ক্যাম। যারা গত ১৭ বছরের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ন্যূনতম ভূমিকা রাখেনি এমন লোকদের উপদেষ্টা করার মধ্যে দিয়ে বিপ্লবকে ধারণকারীদের রাষ্ট্র পরিচালনায় বিরত রাখা হয়েছে। যার ফলে রাষ্ট্রযন্ত্রে এখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদের দখল। এই দখলের ফলে তারা সুনিপুণভাবে গত ১ বছরে বিপ্লবকে বিতর্কিত করে ছেড়েছে। বিপ্লবের আশা আকাঙ্ক্ষার কোন প্রতিফলন না হওয়ায় অবিলম্বে এই সরকার পুনর্গঠন করার দাবি জানান তিনি।
জুলাই মঞ্চের মুখপাত্র সাকিব হোসাইন বলেন, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের শত্রু। তারা বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভিন্ন দেশের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে দেশদ্রোহিতা করেছে। স্পষ্ট দেশদ্রোহী ও সার্বভৌমত্বের শত্রুদের বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে না পারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্বলতার বহি:প্রকাশ। আমরা মনে করি বাংলাদেশে ভিনদেশি আধিপত্যবাদের অবসানে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেনি বর্তমান সরকার। যা প্রমাণ করে এই সরকার জনগণের ম্যান্ডেট হারিয়েছে এবং তারা তাদের অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে।
জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া পরিবারের স্বজনের পাশাপাশি উক্ত সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক দল জাগপা, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, এনপিপি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ, গণঅধিকার পরিষদসহ জুলাইকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন