রিজিক বা জীবিকার মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা। তিনিই মানুষকে দেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, প্রাচুর্য আর সামর্থ্য। আবার তার ইচ্ছাতেই আসে দুঃসময়, আসে অভাব-অনটন। কিন্তু আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের জন্য রিজিকের অনেক দ্বার খুলে রেখেছেন। কোরআন ও হাদিসে এমন কিছু আমলের কথা এসেছে, যেগুলো রিজিক বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনে এনে দেয় বরকত ও কল্যাণ।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত আদায় করলে দ্রুত রিজিক বাড়ে। অভাব দূর হয়। চলুন, জেনে নিই সেই গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর অন্যতম ৫টি
তওবা-ইস্তিগফার
বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে দ্রুত রিজিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর অধিক বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন। এ ছাড়া দান করবেন বাগবাগিচা এবং নদীনালাও ।’ (সুরা নুহ : ১০-১২, সুরা ওয়াকিয়া : ৮২)
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে, মহান আল্লাহ সংকট থেকে তার উত্তরণের পথ বের করে দেবেন। দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ : ১৫১৮)
বিয়ে করা
রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহ তায়ালা প্রাচুর্যময়,মহাজ্ঞানী।’ (সুরা নূর : ৩২)
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষকে সাহায্য করাকে আল্লাহ তায়ালা নিজ দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আর এই তিন শ্রেণির মধ্যে অন্যতম হলো বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি, যিনি বিয়ে করে পবিত্র জীবনযাপন করতে ইচ্ছুক।’ (তিরমিজি : ১৬৫৫)
শোকর আদায়
আল্লাহ তায়ালা যেসব নিয়ামত দান করেছেন তার শোকর আদায় করলে দ্রুত রিজিক বাড়ে। রাব্বুল আলামিন কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইব্রাহিম : ৭)
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখাও রিজিক বৃদ্ধির আরেকটি মাধ্যম। আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, প্রিয় নবীজিকে (সা.) আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক—সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বোখারি ও মুসলিম)
আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় এবং দান-সদকা
দান-সদকা করার মাধ্যমে রিজিক বাড়ে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা : ৩৯)
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দানকারীকে তার দানের জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। অপরজন বলে, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ (বোখারি ও মুসলিম)
মন্তব্য করুন