পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে রাব্বুল আলামিন একটি অঞ্চলকে পবিত্র ও বরকতময় ভূখণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। মুফাসসিরদের ভাষায়, এই ভূখণ্ডটির নাম হলো শাম। মূলত শাম বলে সেকালে ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান ও আশপাশের অঞ্চলকে বোঝানো হতো। এই ভূখণ্ডে ইবরাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), মুসা (আ.), দাউদ (আ.), সুলাইমান (আ.), ঈসাসহ (আ.) অসংখ্য নবী-রাসুল বসবাস করতেন। তাই একে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্রও বলা যায়।
কোরআনের কোথায় কোথায় শামকে পবিত্র বলা হয়েছে?
পবিত্র কোরআনে শাম শব্দটি সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও ৫টি আয়াতে শামের কথা এসেছে। অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে, এসব আয়াতে শামের মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। চলুন, দেখে নিই সেই আয়াতগুলো-
১. পবিত্র ও মহীয়ান তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে (শাম) আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলি দেখানোর জন্য (ভ্রমণ করিয়েছি)। (বনি ইসরাইল : ১)
২. যে জাতিকে দুর্বল ও দীনহীন ভাবা হত আমি তাদের আমার কল্যাণ প্রাপ্ত রাজ্যের (শাম) পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানাই, আর বনি ইসরাইয়ে জাতি সম্পর্কে তোমার রবের শুভ ও কল্যাণময় বাণী (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ হলো, যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর ফির’আউন ও তার সম্প্রদায়ের কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদসমূহকে আমি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছি। (সুরা আরাফ : ১৩৭)
৩. ‘তারা তার (ইবরাহিম আ.) বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আমি তাদেরই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে ছাড়লাম। আর আমি তাকে ও (তার ভ্রাতুষ্পুত্র) লুতকে উদ্ধার করে এমন দেশে (শাম) নিয়ে গেলাম, যা আমি বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণময় করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া : ৭০-৭১)
৪. (আমার ক্ষমতাবলেই) আমি উদ্দাম বায়ুকে (স্বাভাবিক গতিসম্পন্ন) করেছিলাম সোলায়মানের জন্য। তার নির্দেশমতো তা প্রবাহিত হতো সেই দেশের (শাম) দিকে, যাতে আমি কল্যাণ রেখেছি। (সুরা আম্বিয়া : ৮১)
৫. তাদের (কওমে সাবা) এবং যেসব জনপদের (শাম) প্রতি আমি অনুগ্রহ বর্ষণ করেছিলাম, সেগুলোর মাঝে অনেক দৃশ্যমান জনপদ স্থাপন করে দিয়েছিলাম এবং সেগুলোর মাঝে সমান সমান দূরত্বে সফরের মঞ্জিল ঠিক করে দিয়েছিলাম। (আর তাদের বলেছিলাম) তোমরা এসব জনপদে রাতে আর দিনে নিরাপদে ভ্রমণ করো।’ (সুরা সাবা : ১৮)
মন্তব্য করুন