

মানুষের চিন্তা, বিবেক ও বোধকে আলোকিত করে যে জ্ঞান, ইসলাম সেই জ্ঞানকে দিয়েছে সর্বোচ্চ মর্যাদা। আর জ্ঞানের বাহক আলেম বা বুদ্ধিজীবীরা ইসলামের দৃষ্টিতে কেবল সমাজের পথপ্রদর্শক নন, বরং আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহপ্রাপ্ত এক শ্রেণি।
ইতিহাসের প্রতিটি যুগেই ইসলাম জ্ঞানচর্চা, চিন্তাশীলতা ও কলমের শক্তিকে গুরুত্ব দিয়েছে। তাই শান্তি ও মানবতার এ ধর্মটি ধর্মপ্রাণ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না। কেননা পবিত্র কোরআনের প্রথম বাণী হলো, ‘পড়ো! তোমার প্রভুর নামে...পাঠ করো সেই মহিমান্বিত প্রভুর নামে, যিনি কলম দিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন।’ (সুরা আলাক : ১-৪)
কোরআনে বুদ্ধিজীবীদের সম্মান
আলেম বা বুদ্ধিজীবীদের সম্মান জানিয়ে সুরা মুজাদালাতে রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের উচ্চ মর্যাদা দেবেন। আর যা কিছু তোমরা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে পূর্ণ অবহিত।’( আয়াত : ১১)
সুরা বাক্বারাতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যাকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, তাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়েছে’ (আয়াত : ২৬৯)। আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আপনি বলুন, যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে? বুদ্ধিমান লোকরাই তো নসিহত কবুল করে থাকে।’(সুরা জুমার : ৯)
হাদিসে বুদ্ধিজীবীদের সম্মান
একাধিক হাদিসে মহানবী (সা.) মুসলমানদের জ্ঞান সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘শিক্ষিত সম্প্রদায় নবীর উত্তরাধিকারী। যে জ্ঞানকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছে, সে তার এক বিরাট অংশ অধিকার করেছে এবং যে জ্ঞানার্জনের পথে নিজেকে নিয়োজিত করে, আল্লাহ তার জন্য বেহেশতের পথ সুগম করেন।’ (মুসলিম : ২৬৯৯)
সমাজের শিক্ষক শ্রেণিপেশার মানুষজনই বেশিভাগ ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবী হয়ে থাকেন। আর ইসলামে শিক্ষকের মর্যাদা অপরিসীম। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ, তার ফেরেশতারা এবং আসমান-জমিনের অধিবাসীরা, এমনকি গর্তের পিপড়া ও পানির মাছ পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া করে, যে মানুষকে কল্যাণকর জ্ঞান শিক্ষা দেয়।’ (তিরমিজি : ২৬৮৫)
মন্তব্য করুন