কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আ. লীগের কর্মসূচিতে অংশ নিলে কী হবে জানালেন প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : সংগৃহীত

যতক্ষণ আওয়ামী লীগ জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও তাদের সব কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা না চায় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোনো বিক্ষোভ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশ করার স্বাধীনতা এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আজ সকালে গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাড়ে পাঁচ মাসে কেবল ঢাকায় কমপক্ষে ১৩৬টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বিক্ষোভের ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবুও, সরকার কখনো বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেননি।’

শফিকুল আলম লেখেন ‘আমাদের কি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করার সুযোগ দেওয়া উচিত? জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যায় অংশ নিয়েছিল। তাদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ হয়েছেন কয়েকশ তরুণ শিক্ষার্থী, এমনকি নাবালক শিশুরাও। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডবের জন্য দায়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার।’

তিনি আরও লেখেন, ‘গতকাল কয়েকজন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মীর সাক্ষাৎকারের বরাতে নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, শেখ হাসিনা তার ১৬ বছরের একনায়কত্বের শাসনামলে সরাসরি হত্যা এবং জোরপূর্বক গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি একটি চোরতন্ত্র (ক্লেপ্টোক্রেসি) এবং খুনি শাসনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিরপেক্ষ ও স্বাধীন একটি প্যানেল বলছে, শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে তার ঘনিষ্ঠরা ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তি থেকে কোটি কোটি ডলার চুরির দায়ে হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত চলছে। এ ছাড়াও, প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। প্রায় তিন হাজার মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরের সমাবেশ এবং মাওলানা সাঈদীর বিচারিক রায়ের পর বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ বাহিনী হাসিনার শাসনামলে পুলিশ লীগে পরিণত হয়েছিল। হাসিনার একনায়কতন্ত্রে প্রায় ষাট লাখ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়। এমনকি দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয়, পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় এবং নির্বাসনে পাঠানো হয়।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লেখেন, ‘যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ এই গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং প্রকাশ্য দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাইবে এবং যতক্ষণ না তাদের অন্যায়কারী নেতাকর্মীরা বিচার ব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করে তাদের অপরাধের জন্য বিচারকার্যের প্রক্রিয়া শুরু করে পাপমোচন করতে উদ্যোগ না নেবে এবং যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দিয়েছিল?’

পোস্টের সর্বশেষে তিনি লেখেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশ কি একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজ চক্রকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেবে? কোনো দেশই জবাবদিহিতা ছাড়া স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার অনুমতি দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ এই খুনিরা কোনো প্রতিবাদ-সমাবেশ করলে তার বিরুদ্ধে কঠিন জবাব দেবে। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে সুযোগ দেব না। আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দীপাবলিতে জোবায়েদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন ও প্রার্থনা

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৬ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান করবে : এসএম জাহাঙ্গীর

ভিক্টোরিয়া কলেজে সংঘর্ষের ঘটনার মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ১৭

নানা দাবিতে এইচএসসি উত্তীর্ণদের একাংশের আন্দোলনের ডাক

৭ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য হার 

পীর সাহেব মধুপুর / কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে গণবিস্ফোরণ ঘটবে

জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হত্যা : জড়িতদের নিয়ে যা বললেন বিএনপি নেতা

‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়’

বিমানবন্দরের আগুনে পুড়ল ২০০ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল

৯ সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার

১০

বরগুনায় সওজ শ্রমিকদের তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি

১১

পুঁজিবাজারে যুক্ত হচ্ছে জেলা-উপজেলা প্রশাসন

১২

জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধিদলের বৈঠক

১৩

রাবেয়া-আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঢাকা বিভাগীয় কাবাডি চ্যাম্পিয়ন

১৪

টেকসই বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীরাই আশার আলো : চসিক মেয়র

১৫

এস আলমের শতাধিক কোম্পানির ৫১৩ কোটি শেয়ার জব্দ

১৬

খুবিতে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বিশেষ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

১৭

শহীদ তায়িমের কবর জিয়ারত ও স্বজনদের পাশে বিএনপি

১৮

বিলাসী জীবনযাপনসহ পুরো কার্যক্রমের তথ্য জানাল বাংলাদেশি পর্ন তারকা যুগল

১৯

ইউপি সদস্যের বাড়ির ছাদে শুকানো হচ্ছিল গাঁজা, গ্রেপ্তার ১

২০
X