সম্প্রতি ‘নাহিদকে তার প্রাপ্য হিসেবটা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে’ শিরোনামে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মারধর করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
তবে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রচারিত ভিডিওতে সাদা পোশাক পরিহিত মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তি নাহিদ ইসলাম নন।
সংস্থাটির টিমের সদস্যরা জানান, প্রকৃতপক্ষে ভিন্ন দুই সময়ের ফুটেজ একত্র করে শুধু সাদা পোশাকের ওপর ভিত্তি করে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে মারধর করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক জাগো নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ মার্চ ‘বরিশালে নাহিদের সামনেই এনসিপির দুই গ্রুপের হাতাহাতি’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফুটেজের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর প্রথম অংশের মিল রয়েছে।
জাগো নিউজের মূল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওর ২৮ সেকেন্ড সময়ে নাহিদ ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে সরে যেতে দেখা যায়। পাশাপাশি মারধরের কাহিনি শুরু হলে সে সময় নাহিদ ইসলামকে দৃশ্যপটে অনুপস্থিত দেখা যায়।
এ ছাড়া আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ১২ সেকেন্ড সময়ের ভিডিওটির ০৯ সেকেন্ড সময়ের পরে মারধরের দৃশ্য শুরু হলে সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহারে তা ঢেকে দেওয়া হয়। ফলে মারধরের ওই দৃশ্য অস্পষ্ট অবস্থায় দেখা যায়।
এ ছাড়া, ‘BHS News’ নামক একটি ফেসবুক পেজে গত ২০ মার্চে ‘বরিশালে নাহিদ ইসলামের সামনেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক পার্টির কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তির চেহারা স্পষ্ট দেখা যায়।
বরিশালে সেদিন আসলে কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২০ মার্চ বিকালে বরিশাল ক্লাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। মতবিনিময় সভার বক্তব্য শেষে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ করলে অপর গ্রুপের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা মাইকে বারবার তাদের নিবৃত হওয়ার জন্য ঘোষণা দিতে থাকলেও হাতাহাতি চলতে থাকে এবং সেখানে নাহিদ ইসলামের পথরোধ করে এক গ্রুপ বিক্ষোভ করতে শুরু করে।
অর্থাৎ উপরোক্ত বিশ্লেষণে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে যে, বরিশালে মারধরের শিকার ওই ব্যক্তি নাহিদ ইসলাম নন। সুতরাং ওই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
মন্তব্য করুন