শুরুটা হয়েছিল ধ্বংসস্তুপের মতো। তারপর এল সাহসিকতার গল্প। আর শেষটা? একেবারে নাটকীয়—শেষ ওভারে দুই নো বলসহ ২৬ রান তুলে ম্যাচে ফেরার ঘোষণা দিল বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রানের সংগ্রহ গড়েছে টাইগাররা।
এই রান যে একসময় প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছিল, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম অংশটা ছিল একেবারেই নাটকীয়। প্রথম ম্যাচে শতক হাঁকানো ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন প্রথম ওভারেই বিদায় নেন। এরপর লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়ও ফিরে যান দ্রুত, দলের স্কোরবোর্ড তখনও সেভাবে গড়ায়নি। তবে আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান অন্য প্রান্তে একাই চালিয়ে গেছেন আক্রমণ। মাত্র ১৮ বলে ৪০ রান করে আশা জাগিয়েছিলেন বাঁহাতি এই তরুণ।
কিন্তু পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে হায়দার আলির অসাধারণ ইনসুইং-এ বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনিও। সেই হায়দার এই ম্যাচে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের আতঙ্ক। ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৩ উইকেট নিয়ে দেন মাত্র ৭ রান—টি-টোয়েন্টিতে এমন বোলিং আজকাল খুব একটা দেখা যায় না।
৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে যখন ধস নেমেছে, তখন দাঁড়িয়ে যান জাকের আলী। মাথায় আঘাত পাওয়ার পর চিকিৎসা নিয়ে আবার ব্যাট করতে নামা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার খেলেছেন ৩৪ বলে ৪১ রানের সাহসী ইনিংস।
তার পাশে শেষ দিকে দাঁড়ান হাসান মাহমুদ, যার ১৫ বলে ২৬ রান এবং শরীফুল ইসলামের ৭ বলে ১৬ রান মিলে ম্যাচের রঙটাই পাল্টে দেয়।
সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে শেষ ওভারে। যখন সবাই ভাবছিলেন, বোলিংয়ে আসবেন অভিজ্ঞ স্পিনার ধ্রুব পরাশর, তখন হঠাৎই বল তুলে দেওয়া হয় মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে। ফলাফল—২টি নো বলসহ ২৬ রান!
শেষ পাঁচ ওভারে ৬৯ রান তুলে বাংলাদেশ যেন ইনিংসের শেষভাগে এক নতুন আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছে। তবে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে প্রশ্ন উঠবেই—টপ অর্ডারে বারবার এমন ভাঙন কেন?
বোলিংয়ে হায়দার আলি ছিলেন ম্যাচের সেরা পারফরমার, তাকে সহায়তা করেছেন সাগির খান (২ উইকেট) ও মতি উল্লাহ খান (২ উইকেট)।
১৬২ রান, শারজাহের মতো ছোট মাঠে মাঝারি স্কোরই বলা চলে। তবে উইকেট কিছুটা মন্থর, আর বাংলাদেশ যদি শুরুতে উইকেট তুলে নিতে পারে, তাহলে এই ম্যাচে সিরিজ জয়ের দরজা একেবারে খুলে যেতে পারে।
দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হতে আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। বাংলাদেশ কী পারবে শেষ হাসি হাসতে? উত্তর দেবে শারজাহর রাত।
মন্তব্য করুন