২০২৫ সালের আসর শেষ হওয়ার পর আর কোনো ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস (ডব্লিউসিএল)-এ অংশ নেবে না পাকিস্তান। বিস্ফোরক এক সিদ্ধান্তে টুর্নামেন্টটিতে ‘সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা’ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
পিসিবির ৭৯তম বোর্ড অব গভর্নর্স (বিওজি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয় চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভির সভাপতিত্বে।
সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ—২০২৫ সালের আসর ঘিরে রাজনৈতিক প্রভাব, পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক।
বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল ভারত চ্যাম্পিয়নস দলের পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নসের বিপক্ষে দুই ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি—একটি ছিল লিগ পর্বের, অন্যটি সেমিফাইনাল। রাজনৈতিক টানাপোড়েনকে কারণ দেখিয়ে ম্যাচে না খেলায় লিগ ম্যাচে উভয় দলকে একটি করে পয়েন্ট দেওয়া হয়, আর সেমিফাইনালে পাকিস্তান দল ‘ওয়াকওভার’ পেয়ে ফাইনালে উঠে যায়।
এমন ঘটনার পর পিসিবি কড়া ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘পিসিবি সবসময়ই রাজনীতি ও খেলাধুলাকে আলাদা রাখার পক্ষে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট একটি ইতিবাচক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করা উচিত—যেখানে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চর্চা হয়।’
পিসিবি আরও বলে, ‘একটি টুর্নামেন্ট যেখানে কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা অংশ নিচ্ছেন, সেখানে রাজনৈতিক আবেগে প্রভাবিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কেবল হতাশাজনকই নয়, বরং স্বাধীন ক্রীড়া ইভেন্টগুলোর ভবিষ্যতের জন্যও উদ্বেগজনক।’
ডব্লিউসিএল কর্তৃপক্ষের পক্ষপাতমূলক প্রেস বিজ্ঞপ্তিকেও ‘রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত’ এবং ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছে পিসিবি। বোর্ডের দাবি, ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি জাতীয়তাবাদী চাপে তৈরি একটি পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ।’
এই সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত যেকোনো টুর্নামেন্টে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিসিবি।
উল্লেখ্য, নর্থহ্যাম্পটনে অনুষ্ঠিত গত আসরের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল শোয়েব মালিকের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস। তবে তার চেয়েও বড় গল্প হয়ে থাকল পিসিবির এই ‘বয়কট ঘোষণা’, যা ভবিষ্যতের জন্য রেখে গেল কড়া বার্তা—রাজনীতি আর ক্রীড়ার মেলবন্ধনে তারা নেই।
মন্তব্য করুন