পাকিস্তান ক্রিকেটের এক সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল পেসার উসমান শিনওয়ারি শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালেন। টেস্ট ক্রিকেট থেকে আগেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি, এবার সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও তার অধ্যায় শেষ হলো নীরবে।
পাকিস্তানের হয়ে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তিনি এক টেস্ট, ১৭টি একদিনের ম্যাচ (ওডিআই) ও ১৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ।
তার ক্যারিয়ারজুড়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বারবারের পিঠের চোট। তবুও তিনি বিশেষ করে ওডিআই ফরম্যাটে নিজের ছাপ রাখতে সক্ষম হন। ১৭ ম্যাচে তার শিকার ৩৪ উইকেট। এর মধ্যে দুটি পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি রয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
প্রথমবার ২০১৭ সালে শারজায় মাত্র দ্বিতীয় ওডিআইতে ২১ বলের ব্যবধানে ৫ উইকেট নিয়ে (৫/৩৪) বাজিমাত করেন। এরপর ২০১৯ সালে করাচির ন্যাশনাল ব্যাংক স্টেডিয়ামে তার দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট (৫/৫১) আসে, যা ছিল তার শেষ দিকের ম্যাচগুলোর একটি।
টি-টোয়েন্টিতে তিনি নিয়েছেন ১৩ উইকেট, আর একমাত্র টেস্টে মাত্র একটি উইকেট শিকার করতে পেরেছেন।
২০১৩ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝড় তুলে আলোচনায় আসেন শিনওয়ারি। মাত্র ৩.১ ওভারে ৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে মিসবাহ-উল-হকের সুই নর্দার্ন গ্যাস পাইপলাইন্স লিমিটেডকে গুঁড়িয়ে দেন তিনি। সেই অগ্নিঝরা স্পেলই তাকে দ্রুত জাতীয় টি–টোয়েন্টি দলে জায়গা করে দেয়। তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি এই বামহাতি পেসার।
ক্যারিয়ার জুড়ে দেশি-বিদেশি নানা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন শিনওয়ারি। পাকিস্তানে করাচি কিংস, লাহোর কালান্দার্স ও কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন তিনি। দেশের বাইরে খেলেছেন সিলেট সিক্সার্স (বিপিএল), মেলবোর্ন রেনেগেডস (বিগ ব্যাশ), জাফনা স্ট্যালিয়ন্স ও জাফনা কিংস (লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ), টিম আবুধাবি (টি-টেন) এবং গ্লাসগো জায়ান্টসের হয়ে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলো তার জন্য ছিল হতাশার। সর্বশেষ ন্যাশনাল টি–টোয়েন্টি কাপে কোয়েটা রিজিয়নের হয়ে খেললেও চার ম্যাচে একটি উইকেটও পাননি তিনি। এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান কাপে খেলেছিলেন শেষ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ।
২০২১ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তার কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিল করে। এরপর ধীরে ধীরে মূলধারার ক্রিকেট থেকে ছিটকে যান শিনওয়ারি।
কখনও ‘সুইংয়ের জাদুকর’, কখনও ‘ইনজুরি-ভুক্তভোগী’, নানা ট্যাগে পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে পাকিস্তান ক্রিকেটে তার নামটি থেকে যাবে এক ঝলক আগুনঝরা সূচনার সাক্ষী হিসেবে।
মন্তব্য করুন