

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে যেন রীতিমতো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মাঠের সীমানা ছাড়িয়ে এখন তোলপাড় চলছে দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে। জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগই যেন এই ঝড়ের সূচনা। যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে দলীয় বিভাজন—সবকিছু মিলিয়ে বিষয়টি এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে।
জাহানারার অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু এবং প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। আরও গুরুতর বিষয় হলো—তিনি দাবি করেছেন, বিসিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানালেও কোনো সাড়া পাননি।
তার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর আরও কয়েকজন নারী ক্রিকেটার মুখ খুলেছেন, কেউ কেউ ইঙ্গিত দিয়েছেন দলীয় গোষ্ঠীবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দিকেও। এই পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, জাহানারার অভিযোগসহ জাতীয় নারী দলে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তদন্তে একটি তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটির কনভেনর হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি তারিক উল হাকিম। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিসিবির পরিচালক রুবাবা দৌলা এবং বাংলাদেশ নারী ক্রীড়া সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
এই কমিটি নারী ক্রিকেটে সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করবে এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে বিসিবিকে সুপারিশ দেবে বলে জানা গেছে।
জাহানারার অভিযোগকে কেউ কেউ “ভিত্তিহীন” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, তবে বোর্ডের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করছে যে বিষয়টি আর হালকাভাবে নেওয়ার অবকাশ নেই। এখন চোখ থাকবে, তদন্ত কমিটি কীভাবে এই সংবেদনশীল ও নজিরবিহীন ইস্যুতে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারে—এবং নারী ক্রিকেটে আবারও বিশ্বাস ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে পারে কিনা।
মন্তব্য করুন