সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে গেলে খলনায়ক হতেন তাইজুল ইসলাম। কারণ প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কেন উইলিয়ামসনের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন তিনি। যদিও প্রথম ইনিংসে বোল্ড করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে এলবির ফাঁদে ফেলেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
এভাবে পুরো ম্যাচে এভাবে এক এক করে কিউইদের ‘বিগ ফিশ’ শিকার করে যান তাইজুল। দুই ইনিংস মিলিয়ে তার ঝুলিতে যায় ১০ উইকেট। পুরো ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এই কীর্তি গড়লেন তিনি। এ ছাড়া ১২তম বারের মতো দেখা পেলেন ফাইফার।
সব মিলিয়ে টেস্টে সিলেটে ২১ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এই ভেন্যুতে তিনি এখন সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি। এর আগে ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে শিকার করেছিলেন ১১ উইকেট। এরপরও সেই ম্যাচে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
এবার ১০ উইকেট প্রাপ্তির ম্যাচের হারের গ্লানি বইতে হবে না তাকে। বরং বিশ্বকাপের ভরাভুরিতে চারদিকে চলতে থাকা সমালোনায়র মুখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয়টি অন্যরকম আত্মবিশ্বাস জোগাবে পুরো বাংলাদেশ দলকে।
সিলেট টেস্টে ১০ উইকেট শিকার করেন আরও একটি কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন তাইজুল। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে এক ম্যাচে দুবার করে ১০ উইকেট শিকারের তালিকায় ছিলেন দুজন। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে তাইজুলের নাম।
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তাইজুল জানান, ‘দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আনন্দিত। ১০ উইকেট পাওয়ায় প্রেরণা আরও বাড়ল। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তুলে নেওয়া জয় দলের মানসিকতাকে ঠিক রাখবে। দলের সবার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের পর সিলেট। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয়। সাবেক বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে পাওয়া এই জয় অন্যরকমই বটে। তবে তাইজুলের ঘূর্ণি আর দলগত পারফরম্যান্সে লাল বলের ক্রিকেটে দেশের মাটিতে এই প্রথম নিউজিল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশ। ‘প্রথম’-এর অর্জনের দিনে এটিও এক ঐতিহাসিক জয় বটে।
তবে সবচেয়ে সুখকর ব্যাপার হচ্ছে, নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে বাংলাদেশের শুরুটাই হলো জয় দিয়ে। বিশ্বকাপ দুঃস্মৃতি ভুলে এমন দুর্দান্ত বাংলাদেশকেই তো দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। নাজমুল হোসেন শান্তর নতুন-বাংলাদেশ সেটা পেরেছে। দারুণ প্রতাপেই বিজয়ের গল্প লিখেছে।
মন্তব্য করুন